আতঙ্কের রাত! ট্রাম্প-পুতিনের জোট নিয়ে মুখ খুললেন ইউক্রেনীয় পরিচালক

ইউক্রেনের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা সের্গেই লোজনিৎসাকে সম্প্রতি কান চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর নতুন সিনেমা ‘টু প্রসিকিউটরস’ নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে। সিনেমাটি নির্মাণের প্রেক্ষাপট এবং এর বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করার সময় তিনি বর্তমান বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

লোজনিৎসারের মতে, রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে সম্ভাব্য একটি জোট একটি ‘দুঃস্বপ্নের’ মতো।

লোজনিৎসারের নতুন সিনেমাটি মূলত স্তালিন যুগের নিপীড়ন ও অত্যাচারের প্রেক্ষাপটে নির্মিত। সিনেমার গল্পে দেখা যায়, তরুণ ও আদর্শবাদী প্রসিকিউটর আলেকজান্ডার করনেভ-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাশিয়ান অভিনেতা আলেকজান্ডার কুজনেটসভ।

করনেভ একটি বেনামী চিঠি পান, যেখানে পুলিশের হেফাজতে চালানো অত্যাচারের বর্ণনা রয়েছে। কারারক্ষীদের বাধার পরেও করনেভ এই ঘটনার তদন্ত করতে এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি জানাতে আগ্রহী হন।

নির্মাতা লোজনিৎসারের মতে, বর্তমান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অধীনে রাশিয়া কার্যত স্তালিনবাদের দিকে ফিরে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, রাশিয়া আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ করছে। একইসঙ্গে, লোজনিৎসারের উদ্বেগের কারণ হলো, একসময়ের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে।

তাঁর আশঙ্কা, এই দুটি দেশের মধ্যে দ্রুতই ‘সমতা’ তৈরি হতে পারে।

লোজনিৎসাকে কান চলচ্চিত্র উৎসবে নিয়মিত দেখা যায়। ২০১৮ সালে তাঁর পরিচালিত সিনেমা ‘ডনবাস’ সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতেছিল।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্লিনে বসবাস করছেন। তবে ইউক্রেনে তিনি বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।

রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপিয়ান ফিল্ম একাডেমি ‘নিরপেক্ষ’ ভূমিকা পালন করায় তিনি এর থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। একইসাথে, রুশ শিল্প ও সংস্কৃতির ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করায় তাঁকে ইউক্রেনীয় ফিল্ম একাডেমি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প প্রশাসনের ইউক্রেনকে রাশিয়ার শর্ত মেনে নিতে চাপ প্রয়োগ করা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে লোজনিৎসা সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।

তিনি বলেন, ‘নেতাদের সিদ্ধান্ত বা কার্যক্রমের দিকে তাকানোর পরিবর্তে আমাদের নিজেদের কথা ভাবতে হবে। আমাদের কখনোই হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়।

পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আমাদের নিজেদেরকেই ভাবতে হবে, এই পরিস্থিতিতে আমরা কী করতে পারি।’

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *