পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের কাদা ছোড়াছুড়ি!

পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি। কাশ্মীর সীমান্তে কয়েকদিনের সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েক দিন পরেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের সৃষ্টি হয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে এক সেনা ঘাঁটিতে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি পাকিস্তানকে একটি ‘অবিবেচক ও দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র’ হিসেবে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তত্ত্বাবধানে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে রাজনাথ সিংয়ের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও প্রতিরোধের বিষয়ে গভীর হতাশা ও উদ্বেগের পরিচয় দিয়েছেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতিসংঘের একটি বিশেষ সংস্থা হিসেবে আইএইএ’র ম্যান্ডেট ও দায়িত্ব সম্পর্কেও ভারতীয় মন্ত্রীর কোনো ধারণা নেই। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বরং ভারতের পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় পদার্থের চুরি ও অবৈধ পাচার নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।

১৯৯৮ সালে উভয় দেশ পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর থেকে এই অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা হয়, যাতে প্রায় ৭০ জন নিহত হয়েছে। এর আগে, গত ২২শে এপ্রিল ভারতীয়-শাসিত কাশ্মীরের পাহালগামে একটি বিদ্রোহী হামলায় নয়াদিল্লি পাকিস্তানকে দোষারোপ করে, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার এক বক্তৃতায় বলেন, সীমান্তে পুনরায় কোনো হামলার ঘটনা ঘটলে ভারত আবারও হামলা চালাবে এবং পাকিস্তানকে পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল করতে দেওয়া হবে না। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে মোদির এই বক্তব্যকে ‘উস্কানিমূলক ও উত্তেজনাপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তারা এটিকে একটি ‘বিপজ্জনক পদক্ষেপ’ হিসেবেও বর্ণনা করেছে।

এদিকে, ভারতীয়-শাসিত কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার ত্রাল শহরে নিরাপত্তা বাহিনী সন্দেহভাজন তিনজন জঙ্গিকে হত্যা করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও, মঙ্গলবার কাশ্মীরের দক্ষিণে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আরও তিনজন নিহত হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মহল থেকে শান্তির বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উভয় দেশকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *