রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ‘পশ্চিম’ নাকি ‘পূর্ব’-এর পথে?
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য রাষ্ট্র রোমানিয়া আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। এই নির্বাচনকে দেশটির ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে কট্টর-ডানপন্থী প্রার্থী জর্জ সিমিয়ন, যিনি ‘অ্যালায়েন্স ফর দ্য ইউনিটি অফ রোমানিয়ান্স’ (এইউআর) দলের নেতা, অন্যদিকে বর্তমান বুখারেস্টের মেয়র এবং প্র-ইউরোপীয় সংস্কারপন্থী প্রার্থী নিকোসর ডান। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে কে দেশটির নেতৃত্ব দেবেন, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচন শুধু একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নয়, বরং এটি রোমানিয়ার ভবিষ্যৎ ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। একদিকে যেমন ইইউ এবং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার সম্ভাবনা, তেমনি অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী আদর্শের দিকে ঝুঁকে ‘পূর্ব’-এর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ারও সুযোগ রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনের ফল রোমানিয়ার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, দুর্নীতি, ইইউ-এর সঙ্গে সম্পর্ক, রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতি দেশটির নীতি, এবং জাতীয়তাবাদের উত্থান—এসব বিষয় নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নির্ভরশীল।
গত কয়েক বছরে রোমানিয়ার রাজনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেক ভোটার হতাশ হয়েছেন। এর ফলস্বরূপ, ডানপন্থী ও জাতীয়তাবাদী দলগুলোর প্রতি সমর্থন বেড়েছে।
সিমিয়নের দল এইউআর এরই মধ্যে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তাদের মূল প্রতিশ্রুতি হলো— পরিবার, জাতি, বিশ্বাস ও স্বাধীনতা—প্রতিষ্ঠা করা।
অন্যদিকে, নিকোসর ডান একজন সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত। তিনি ইইউ-এর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে এবং ইউক্রেনকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও সাম্প্রতিক জনমত সমীক্ষায় দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
এই নির্বাচনের ফল নিয়ে রোমানিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকে মনে করছেন, সিমিয়নের জয় হলে দেশটির পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক দুর্বল হতে পারে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, পরিবর্তনের জন্য সিমিয়নের মতো নেতার প্রয়োজন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, ভোটারদের অংশগ্রহণের ওপরই অনেক কিছু নির্ভর করবে।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস