আতঙ্কের শিকার হয়েছি, কণ্ঠ হারিয়েছি: কেন দুর্বলতা থেকে পালাতে চান উইকেন্ড?

বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ‘দ্য উইকেন্ড’-এর জীবনের নানা দিক নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন তিনি। খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে কিভাবে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে লড়াই করতে হয়েছে, সে সব কথাই উঠে এসেছে তাঁর বক্তব্যে।

সেই সঙ্গে নিজের নতুন চলচ্চিত্র ‘হারি আপ টুমোরো’ এবং ‘দ্য উইকেন্ড’ পরিচয় থেকে মুক্তি পাওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।

লস অ্যাঞ্জেলেসের সোফি স্টেডিয়ামে ২০২২ সালে এক কনসার্টের সময় কণ্ঠ হারান অ্যাবেল টেসিফে, যিনি ‘দ্য উইকেন্ড’ নামেই পরিচিত। মঞ্চে গান গাওয়ার সময় তিনি অনুভব করেন তাঁর কণ্ঠ সঙ্গত করছে না।

পরবর্তীতে জানা যায়, এটি ছিলো আসলে একটি প্যানিক অ্যাটাক। এর কিছুদিন পরেই মুক্তি পায় তাঁর অভিনীত ও সহ-প্রযোজিত টিভি সিরিজ ‘দ্য আইডিয়াল’।

সিরিজটি সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়।

এই ঘটনার পরেই যেন জীবনের অন্য এক অধ্যায় শুরু হয় তাঁর। এরপর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন টেসিফে।

এরি ফলস্বরূপ তিনি ‘হারি আপ টুমোরো’ নামের একটি মনো-বৈজ্ঞানিক থ্রিলার-এর চিত্রনাট্য লেখেন। সিনেমাটিতে নিজের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন তিনি।

সিনেমাটিতে তাঁর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ব্যারি কেওগান এবং জেনা ওর্তেগা।

সংগীত জগতে ১৫ বছর কাটিয়ে ‘ব্লাইন্ডিং লাইটস’-এর মতো জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন টেসিফে। তাঁর এই গানটি এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার শোনা গানের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।

তবে, এই সাফল্যের পরেও তিনি চান, ‘দ্য উইকেন্ড’ নামক পরিচিতি থেকে বেরিয়ে আসতে। কারণ, তাঁর মতে, একজন শিল্পী হিসেবে তিনি তাঁর অনেক কিছুই করেছেন এবং এবার নতুন কিছু করার সময় এসেছে।

টরন্টোতে জন্ম নেওয়া টেসিফের বেড়ে ওঠা তাঁর মা ও ঠাকুরমার কাছে। কৈশোরে তিনি স্কুল ছাড়লেও, সঙ্গীতের প্রতি ছিল তাঁর গভীর অনুরাগ।

শুরুতে তিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচিতি পান। পরবর্তীতে কোচেলা উৎসবে তাঁর পরিবেশনা দেখে তিনি নতুন করে অনুপ্রাণিত হন এবং আরও বেশি কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।

শুরুর দিকে টেসিফের গানগুলোতে মাদক, সম্পর্কের জটিলতা এবং মানসিক আঘাতের বিষয়গুলো প্রধান্য পেত। তবে, তিনি সবসময় চেষ্টা করেছেন একজন শিল্পী হিসেবে নিজেকে ভেঙে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে।

তাঁর কথায়, একজন শিল্পী হিসেবে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এখন তাঁর স্বপ্নগুলো পূরণ করতে চান।

নিজের অতীতের কথা বলতে গিয়ে টেসিফে জানান, একসময় মঞ্চে পারফর্ম করার জন্য তিনি মদ্যপান করতেন, যা তাঁর স্নায়ু দুর্বলতাকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনত।

তবে, তিনি সবসময় চেয়েছেন, নিজের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে এবং একজন ভালো শিল্পী হিসেবে পরিচিত হতে।

বর্তমানে টেসিফে তাঁর নতুন অ্যালবাম ‘হারি আপ টুমোরো’ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। একই সঙ্গে তিনি তাঁর পুরনো দিনের গানগুলো নতুন করে তৈরি করার চেষ্টা করছেন।

তিনি মনে করেন, একজন শিল্পী হিসেবে তাঁর নতুন কিছু করার আছে এবং সে লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি চান, তাঁর শিকড়ের সঙ্গে পরিচিত হতে এবং নিজের সংস্কৃতিকে আরও ভালোভাবে জানতে।

টেসিফের কথায়, তিনি এখনও নিশ্চিত নন ‘দ্য উইকেন্ড’ নামটি ব্যবহার করা হবে কিনা।

তবে, তিনি চান, তাঁর জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে, যেখানে তিনি তাঁর ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে আরও বেশি গুরুত্ব দেবেন।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *