আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক (আমদানি কর) বৃদ্ধি করায় বিশ্বজুড়ে অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে।
এর ফলে বাংলাদেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর অনুযায়ী, ওয়ালমার্ট থেকে শুরু করে ম্যাটেল, মাইক্রোসফট, এবং প্রোক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের মতো বড় কোম্পানিগুলো এরই মধ্যে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, অথবা বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিভিন্ন দেশের পণ্য, বিশেষ করে চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেছে। এর কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে, এর মাধ্যমে তারা দেশের উৎপাদন খাতকে শক্তিশালী করতে চায়। কিন্তু এর ফলস্বরূপ, যারা এই পণ্যগুলো আমদানি করে, তাদের খরচ বাড়ছে।
ফলে, সেই বাড়তি খরচ ভোক্তাদের ওপর চাপানো হচ্ছে, যার কারণে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।
উদাহরণস্বরূপ, ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, তারা তাদের দোকানে কিছু পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। যেমন, কোস্টারিকা থেকে আসা কলার দাম প্রতি পাউন্ডে প্রায় ৫ টাকার মতো বেড়েছে (মার্কিন ডলারে যা ৫৪ সেন্ট থেকে বেড়ে হয়েছে)। এছাড়া, চীনে তৈরি হওয়া কার সিটের দামও প্রায় ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে।
ম্যাটেল-এর বারবি পুতুল এবং হট হুইলস গাড়ির মতো খেলনার দামও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। মাইক্রোসফট তাদের এক্সবক্স কনসোল এবং কন্ট্রোলার-এর দাম বাড়িয়েছে, যা গেমারদের জন্য একটি দুঃসংবাদ।
এই পরিস্থিতিতে, ই-কমার্স সাইট যেমন শেইন এবং তেমু-ও দাম বাড়িয়েছে। তারা জানিয়েছে, বিশ্ব বাণিজ্য নিয়মের পরিবর্তনের কারণে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।
এছাড়া, স্ট্যানলি ব্ল্যাক অ্যান্ড ডেকার-এর মতো সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক কোম্পানি এবং প্রোক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের মতো ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানিও দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছে।
এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমাদের অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল। যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ চললে, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে।
এর ফলে, আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়লে, তা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে। যেহেতু বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, তাই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে, আমাদের দেশেও জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বাজারের দিকে নজর রাখতে হবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে পারলে, এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সহজ হবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস