শিরোনাম: নিউ জার্সি ট্রানজিট ধর্মঘটে বিপর্যস্ত নিউ ইয়র্কের যাত্রী পরিষেবা, অচলাবস্থা
নিউ ইয়র্ক সিটি এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আবারও কঠিন করে তুলেছে নিউ জার্সি ট্রানজিটের (NJ Transit) শ্রমিক ধর্মঘট। গত ১৬ই মে, শুক্রবার থেকে এই ধর্মঘট শুরু হওয়ায় প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। নিউ জার্সি এবং নিউ ইয়র্কের মধ্যে চলাচলকারী এই রেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মজীবীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভ্রমণ কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ধর্মঘটের মূল কারণ হল বেতন বৃদ্ধি নিয়ে নিউ জার্সি ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ এবং ব্রাদারহুড অফ লোকোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ার্স (Brotherhood of Locomotive Engineers – BLET) ইউনিয়নের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছতে না পারা। শ্রমিক ইউনিয়নটির অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ কর্মীদের ন্যায্য বেতন দিতে রাজি নয়, বরং তারা অন্য খাতে অর্থ ব্যয় করতে বেশি আগ্রহী। অন্যদিকে, নিউ জার্সি ট্রানজিট কর্তৃপক্ষের দাবি, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবি ছিল অযৌক্তিক।
এই ধর্মঘটের ফলে হবসকেন, নিউয়ার্ক এবং আটলান্টিক সিটির মত শহরগুলোতেও চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। ধর্মঘটী শ্রমিকরা নিউ ইয়র্ক সিটির পেন স্টেশন, আটলান্টিক সিটি রেল টার্মিনাল এবং নিউ জার্সির প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। BLET ইউনিয়ন জানাচ্ছে, তাদের সদস্যরা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য এই আন্দোলনে নেমেছেন।
জানা গেছে, নিউ জার্সি ট্রানজিটের একজন ইঞ্জিনিয়ারের গড় বার্ষিক বেতন ১ লক্ষ ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ১ কোটি ৪২ লক্ষ টাকার সমান)। কর্তৃপক্ষ এই বেতন ১ লক্ষ ৭২ হাজার ডলারে (প্রায় ১ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা) বাড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু ইউনিয়নটি কর্মীদের জন্য ২ লক্ষ ২০ হাজার ডলার (প্রায় ২ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা) বেতন বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছিল।
নিউ জার্সির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, তারা বিকল্প হিসেবে বাস ও হালকা রেল পরিষেবা চালু করার চেষ্টা করছে, যা ধর্মঘটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারে। তবে, এই বিকল্প পরিষেবাগুলি শুধুমাত্র ২০ শতাংশ যাত্রীর চাহিদা পূরণ করতে পারবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৮৩ সালে এমন একটি ধর্মঘট হয়েছিল, যেখানে প্রায় ৯০ হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছিলেন। এবারও বহু যাত্রী হয়রানির শিকার হচ্ছেন, অনেকে কাজ এবং অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে গন্তব্যে যেতে পারছেন না। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সেদিকেই এখন সবার দৃষ্টি।
তথ্য সূত্র: পিপল