পেরুর সোনার খনিতে ১৩ খনি শ্রমিকের হত্যাকান্ডে মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার!

পেরুর সোনার খনিতে ১৩ জন শ্রমিকের হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে কলম্বিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মে মাসের শুরুতে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস ঘটনার মূল হোতা মিগুয়েল আন্তোনিও রদ্রিগেজ দিয়াজ, যিনি “কুচিল্লো” নামে পরিচিত, তাকে কলম্বিয়ার মেডেলিন শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়।

পেরুর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এই খবর জানা গেছে। গত মে মাসের শুরুতে পেরুর উত্তরাঞ্চলীয় পাজাজ জেলার সোনার খনিতে শ্রমিকদের অপহরণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে।

অবৈধ সোনার খনি শ্রমিক এবং সশস্ত্র অপরাধী চক্রের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত ১৩ জন শ্রমিকের পোড়া দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

পেরু, কলম্বিয়া ও ইন্টারপোলের যৌথ অভিযানে দিয়াজকে গ্রেফতার করা হয়। পেরুর ন্যাশনাল পুলিশ, ইন্টারপোল এবং কলম্বিয়ার ন্যাশনাল পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তার বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধ, অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে পেরুতে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কলম্বিয়ার পুলিশ প্রধান কার্লোস ট্রায়ানা এক্সে (X) দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির সহায়তায় দিয়াজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সংস্থা আন্তঃদেশীয় অপরাধ চক্রগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত করে থাকে।

আটককৃতের আইনজীবী কেভিন দিয়াজ স্থানীয় রেডিও স্টেশন আরপিকেকে জানিয়েছেন, তার মক্কেল কলম্বিয়ায় ফেরার আগে “কয়েক দিন” ভেনেজুয়েলাতে ছিলেন।

পাজাজ অঞ্চলে সোনার খনির কারণে সৃষ্ট সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় সরকার সেখানে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে। যে খনিতে শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে, সেই লা পোদেরোসা নামের একটি খনি কোম্পানির দাবি, চলতি মাসে প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ঠিকাদার ও খনি শ্রমিকও রয়েছে।

পেরু ল্যাটিন আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ এবং দেশটির অর্থনীতির জন্য খনি শিল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সোনার বাজারের উন্নতির সাথে সাথে অবৈধ খনি ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মাদক পাচারের চেয়েও বেশি লাভজনক।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, অবৈধ খনি ব্যবসা থেকে বছরে প্রায় ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়। এর ফলস্বরূপ, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্যাং-ভায়োলেন্স বা দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে এবং বেশ কয়েকটি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *