কানের ‘পাগলামি’ ও ‘বিস্ময়কর’ ছবি: ক্যামেরা ফোনের আগের দুনিয়া!

কান চলচ্চিত্র উৎসব: এক সময়ের উন্মাদনা, ক্যামেরার চোখে।

ফ্রান্সের কান শহরে অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র উৎসব, যা বিশ্বজুড়ে সিনেমাপ্রেমীদের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। প্রতি বছর এখানে চলচ্চিত্র জগতের তারকাদের আনাগোনা দেখা যায়, সেই সঙ্গে থাকে ফ্যাশন এবং গ্ল্যামারের ঝলকানি।

কিন্তু এই উৎসবের একটি ভিন্ন চিত্র ধরা পড়েছে ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার ডেরেক রিডজার্সের ক্যামেরায়। তাঁর তোলা কিছু ছবি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘কান’ নামের একটি বই।

১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে তোলা এই ছবিগুলো যেন এক অন্য কান-এর গল্প বলে। সেই সময়ে সেল ফোন বা ডিজিটাল ক্যামেরার চল ছিল না।

ফলে উৎসবের ছবিগুলো ছিল অনেক বেশি স্বাভাবিক, স্বতঃস্ফূর্ত। রিডজার্স-এর ছবিতে ক্যামেরাবন্দী হয়েছেন নামী-দামী তারকারা, উঠতি মডেল এবং সাধারণ মানুষজন।

ছবিগুলোতে কান চলচ্চিত্র উৎসবের উন্মাদনা, পাগলামি এবং কৌতূহলোদ্দীপক মুহূর্তগুলো স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

রিডজার্স-এর মতে, কান চলচ্চিত্র উৎসব ছিল মানুষের জীবন ও তাদের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণের এক দারুণ সুযোগ। তিনি মনে করতেন, উৎসবের মূল আকর্ষণ ছবি বা সিনেমা নয়, বরং মানুষের ভিড়, তাদের আচরণ, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ।

তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ক্লint ইস্টউড, হেলমুট নিউটন-এর মতো খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের ছবি। এছাড়াও, সেই সময়ের তরুণ মডেল ফ্রাঙ্কি রেইডার-এর ছবিও রয়েছে, যিনি বইটির প্রচ্ছদে স্থান পেয়েছেন।

আশির দশকে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘হট ডি’অর’ নামে একটি প্রাপ্তবয়স্কদের সিনেমার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হতো। রিডজার্স-এর মতে, এই অনুষ্ঠান উৎসবের আকর্ষণ আরও বাড়িয়েছিল।

মূল চলচ্চিত্র উৎসব যেখানে বেশ গম্ভীর প্রকৃতির ছিল, সেখানে এই ধরনের অনুষ্ঠান কিছুটা হলেও হাসির খোরাক জুগিয়েছে।

রিডজার্স-এর তোলা ছবিগুলোতে সেই সময়ের ফ্যাশন এবং সংস্কৃতির একটি প্রতিচ্ছবিও দেখা যায়। উৎসবের রঙিন জগৎ, তারকাদের উপস্থিতি, ফ্যাশন সচেতনতা – সবকিছুই যেন ক্যামেরাবন্দী হয়েছে।

বর্তমানে, সামাজিক মাধ্যমের যুগে কান চলচ্চিত্র উৎসব একটি ভিন্ন রূপ নিয়েছে। এখনকার দিনে, এই উৎসবের খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে ছবি ও ভিডিওর ছড়াছড়ি।

কিন্তু রিডজার্স-এর ছবিগুলো সেই সময়ের একটি বিরল চিত্র তুলে ধরে, যখন সবকিছু এত দ্রুত উপলব্ধ ছিল না।

রিডজার্স-এর ‘কান’ বইটি যেন সেই সময়ের স্মৃতিচারণ, যেখানে ক্যামেরার পেছনের গল্পগুলোও জীবন্ত হয়ে ওঠে। তাঁর কাজ বর্তমান সময়ের দর্শকদের জন্য একটি মূল্যবান দলিল, যা অতীতের কাহিনীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *