আমেরিকান লেখিকা জুলি ডিভিলিয়ার্স: ক্যান্সার জয় করে নতুন বইয়ের অনুপ্রেরণা। ক্যান্সার একটি ভীতিকর রোগ, যা মানুষকে একেবারে ভেঙ্গে দিতে পারে।
তবে, এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও কিভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, সেই গল্প শোনালেন জনপ্রিয় লেখিকা জুলি ডিভিলিয়ার্স। তিন বছর আগে তিনি জানতে পারেন যে তিনি ‘অ্যানাল ক্যান্সার’-এ আক্রান্ত।
শারীরিক কষ্টের পাশাপাশি এই রোগের সঙ্গে জুড়ে থাকা সামাজিক লজ্জা এবং উদ্বেগকে জয় করে কিভাবে তিনি নতুন করে জীবন শুরু করেছেন, সেই কথাই বলেছেন তিনি। তাঁর এই লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা নিয়ে লেখা হয়েছে একটি নতুন বই, যার নাম ‘মিট মি অ্যাট ওয়ান্ডারল্যান্ড’।
জুলি ডিভিলিয়ার্স-এর ক্যান্সার ধরা পড়ার আগে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমে ডাক্তাররা সেটিকে সাধারণ অর্শ্বরোগ (Hemorrhoids) ভেবে ভুল করেন।
কিন্তু যখন পরীক্ষা করে ক্যান্সার ধরা পড়ে, তখন যেন আকাশ ভেঙে পরেছিল তাঁর ওপর। এরপর শুরু হয় চিকিৎসা। কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশন নেওয়ার সময় শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হয়।
এমন এক সময় আসে যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন তিনি। হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভ্রমে ভুগতেন। একবার তিনি নিজেকে একটি চিজ রেস্তোরাঁ, ‘চক ই চিজ’-এর কর্মী হিসেবে কল্পনা করেছিলেন।
ডিভিলিয়ার্স বলেন, “চিকিৎসার সময় আমি যখন সংজ্ঞা হারাতাম, তখন আমার মনে হতো আমি যেন সেই পুরোনো দিনে ফিরে গেছি, যখন আমি ‘চক ই চিজ’-এ কাজ করতাম। এমনকি আমি সেখানকার পোশাক পরে আছি এমনটাও মনে হতো।”
ক্যান্সারের চিকিৎসার পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন জুলি। এই কঠিন সময়ে পরিবারের সমর্থন ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠার পর তিনি লেখালিখিতে মনোযোগ দেন।
নিজের জীবনের এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি লেখেন নতুন একটি বই, ‘মিট মি অ্যাট ওয়ান্ডারল্যান্ড’। বইটির প্রধান চরিত্রটির মা-ও ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করেছেন।
এই বই লেখার অনুপ্রেরণা সম্পর্কে বলতে গিয়ে জুলি ডিভিলিয়ার্স জানান, “ক্যান্সারের সঙ্গে আমার লড়াইয়ের সময় আমি অনেক কিছু অনুভব করেছি। আমার মনে হয়েছে, এই অভিজ্ঞতা থেকে মানুষকে সাহস যোগানো যায়।
আমার বইটি সেই সাহস এবং ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প বলবে।” জুলি ডিভিলিয়ার্স-এর মতে, ‘অ্যানাল ক্যান্সার’-এর (Anal Cancer) ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা খুবই জরুরি।
এই রোগ নিয়ে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে, যা মানুষকে চিকিৎসা থেকে দূরে রাখে। তিনি চান, তাঁর এই লড়াইয়ের গল্প মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াবে এবং ক্যান্সার আক্রান্তদের সমাজে ভালোভাবে বাঁচতে সাহায্য করবে।
জুলি ডিভিলিয়ার্সের এই বইটি আগামী ২০শে মে প্রকাশিত হবে।
তথ্য সূত্র: পিপল