যুক্তরাজ্যে (UK) ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিন জন ইরানিকে অভিযুক্ত করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। শনিবার (২৫ মে, ২০২৪) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সন্ত্রাস দমন বিষয়ক একটি বড় তদন্তের অংশ হিসেবে এই তিনজনের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযুক্তদের নাম হলো: মোস্তফা সেপাহভান্দ (৩৯), ফারহাদ জাভাদি মানেশ (৪৪) এবং শাপুর কালেহালিখানি নূরি (৫৫)। পুলিশের ভাষ্যমতে, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তারা ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেছেন।
তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরে কারো বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার পরিকল্পনা করারও অভিযোগ আনা হয়েছে।
মেটের কাউন্টার টেরোরিজম কমান্ডের কমান্ডার ডমিনিক মারফি জানান, অভিযুক্তদের দু’সপ্তাহ আগে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে আনা এই অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুতর।
এটি একটি জটিল এবং দ্রুত গতিতে চলা তদন্তের ফল।
মোস্তফা সেপাহভান্দকে যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরে কারও ওপর গুরুতর হামলার উদ্দেশ্যে নজরদারি, অনুসন্ধান এবং তথ্য সংগ্রহের অভিযোগেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। মানেশ এবং নূরিকেও একই ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যেখানে তারা অন্যদের দ্বারা গুরুতর সহিংসতা ঘটানোর উদ্দেশ্যে নজরদারি ও অনুসন্ধানে জড়িত ছিলেন।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া অপর এক ইরানি নাগরিককে (৩১) কোনো অভিযোগ ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, একই দিনে আরও পাঁচজন ইরানিকে একটি ভিন্ন সন্ত্রাস দমন বিষয়ক তদন্তের অংশ হিসেবে আটক করা হয়।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব ইভেট কুপার এই ঘটনাগুলোকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে “সবচেয়ে বড় তদন্ত” হিসেবে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের হাতে ইরানি নাগরিকদের গ্রেপ্তার হওয়ার খবরটি তাকে “বিচলিত” করেছে।
যুক্তরাজ্য সরকার ইরানের ওপর তাদের ‘বিদেশি প্রভাব নিবন্ধন স্কিম’-এর (Foreign Influence Registration Scheme – FIRS) সর্বোচ্চ স্তর প্রয়োগ করেছে। এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো, বিদেশি প্রভাব থেকে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করা।
এই স্কিমের আওতায়, ইরানের হয়ে কাজ করা সকল ব্যক্তি, গোয়েন্দা সংস্থা বা বিপ্লবী গার্ডের সঙ্গে জড়িতদের নিবন্ধন করতে হবে, অন্যথায় তাদের কারাদণ্ড হতে পারে। এই নিয়মটি চলতি বছরের শেষ দিকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা