মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ও ঝড়ে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার, ১৭ই মে, এই দুর্যোগ আঘাত হানে, যার ফলে কানসাসের পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় সময় অনুযায়ী শুক্রবার রাতে এবং শনিবার ভোরের দিকে টর্নেডোগুলো ঘণ্টায় ৪৫ মাইল বেগে বয়ে যায়।
কেন্টাকির লন্ডনের মেয়র র্যান্ডাল ওয়েডল নিশ্চিত করেছেন যে, শুক্রবার সন্ধ্যার টর্নেডোর কারণে “বহু মানুষের মৃত্যু” হয়েছে। লরেল কাউন্টিতে হতাহতের সংখ্যা তিনি প্রকাশ না করলেও জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযান চলছে।
মেয়র ওয়েডল বলেন, “আমি আগে এমন কিছু দেখিনি।” টর্নেডোর আঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে ছিল ৩63 ও 1006 নম্বর রুট, বিমানবন্দর এবং লেভি জ্যাকসন স্টেট পার্ক।
দুর্যোগে লরেল কাউন্টির কয়েকটি আবাসিক এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ফেসবুকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ছবি পোস্ট করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ “বহু আহত” হওয়ার খবর জানায়।
এক পোস্টে তারা জানায়, “শুক্রবার রাতে লরেল কাউন্টির কয়েকটি এলাকায়, যার মধ্যে সানশাইন হিলস এলাকা অন্যতম, টর্নেডো আঘাত হানে। আহতদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং বাড়িগুলোতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে ৩63 নম্বর রুট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লন্ডনের করবিন বিমানবন্দর, লেভি জ্যাকসন ওয়াইল্ডারনেস রোড পার্ক এবং ওকস অফ লন্ডন উপবিভাগেও আঘাত হেনেছে।
এর আগে, মেয়র ওয়েডল ফেসবুকে এক পোস্টে জানান, “প্রবল বাতাস” এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে ভবনগুলোর ছাদ উড়ে যাওয়া, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়া এবং যানবাহনের ক্ষতি অন্যতম।
সেসময় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পরে তিনি ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের একটি জরুরি সতর্কবার্তা পোস্ট করেন, যেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঝড়ের সময় আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
করবিন পুলিশ বিভাগ এবং সোমারসেট ফায়ার ডিপার্টমেন্টও শনিবার সকালে পুলস্কি ও লরেল কাউন্টিতে টর্নেডো সতর্কতা জারি করে। করবিন পুলিশ তাদের পোস্টে লেখে, “লরেল কাউন্টির বাসিন্দাদের জন্য প্রার্থনা করুন এবং সেখানে টর্নেডোর শিকার হওয়া মানুষদের প্রতি সমবেদনা জানান।
জরুরি বিভাগের কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাজ করছেন এবং এখনো তারা ঝড়ের ভেতরেই রয়েছেন। আমরা আন্তঃরাজ্য সড়কের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের জন্য সাহায্য করতে গিয়েছিলাম, যা ছিল খুবই মর্মস্পর্শী।”
ফায়ার ডিপার্টমেন্ট জানায়, তারা স্টপলাইট ২২ এবং পার্কের মিল রোডে “আবহাওয়ার কারণে হওয়া ক্ষতির” মোকাবিলা করছে এবং স্থানীয়দের ওই এলাকাগুলো এড়িয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার খবর অনুযায়ী, এই ভয়াবহ ঝড়ে শুধু কেন্টাকি নয়, মিসৌরিতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং অন্তত ১৬ জন মারা গেছেন।
মিসৌরিতে ঝড়ের কারণে পাঁচ হাজারের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পাঁচ জন নিহত হয়েছে।
আমরা নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
তথ্য সূত্র: পিপল