আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে ‘দ্যা থিক অফ ইট’: ফিরে দেখা

বিখ্যাত ব্রিটিশ রাজনৈতিক ব্যঙ্গাত্মক ধারাবাহিক ‘দ্যা থিক অফ ইট’-এর আত্মপ্রকাশের দুই দশক পরে, এর সৃষ্টি, চরিত্র এবং সমাজের উপর এর প্রভাব নিয়ে একটি নতুন বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন।

আজ থেকে বিশ বছর আগে, যুক্তরাজ্যের টেলিভিশনের পর্দায় আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল ‘দ্যা থিক অফ ইট’ নামক এক ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক ব্যঙ্গাত্মক ধারাবাহিকের। হাস্যরসের মোড়কে ক্ষমতা, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এই ধারাবাহিকটি ছিল এক কথায় অসাধারণ। ব্রিটিশ রাজনীতির ভেতরের গল্পকে কেন্দ্র করে নির্মিত এই সিরিজটি দর্শকদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

ধারাবাহিকটির নির্মাতা ছিলেন আর্মান্দো ইয়ান্নুচি। তাঁর ভাবনা থেকেই জন্ম নিয়েছিল মালকম টাকার, যিনি ছিলেন এক নির্মম ও প্রভাবশালী চরিত্র। পিটার ক্যাপাল্ডি এই চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। এছাড়াও, রেবেকা ফ্রন্ট, জোয়ানা স্ক্যানলান এবং ক্রিস ল্যাংহামের মতো অভিনেতাদের অভিনয় দর্শক মহলে আজও স্মরণীয় হয়ে আছে।

‘দ্যা থিক অফ ইট’-এর নির্মাণশৈলী ছিল অত্যন্ত স্বতন্ত্র। ক্যামেরার কাজ থেকে শুরু করে সংলাপ—সবকিছুতেই ছিল বাস্তবতার ছোঁয়া। চরিত্রগুলোর মুখ থেকে প্রায়ই শোনা যেত তীব্র ভাষা, যা তাদের মানসিক অবস্থা এবং রাজনৈতিক জগতের অস্থিরতাকে ফুটিয়ে তুলত। ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য ছিল অনেকটাই স্বতঃস্ফূর্ত, যা অভিনেতাদের অভিনয়ে নতুনত্ব এনেছিল।

ধারাবাহিকটিতে দেখানো বিভিন্ন ঘটনা, যা পরবর্তীতে বাস্তবেও দেখা গেছে, সেগুলোর জন্য ‘দ্যা থিক অফ ইট’ বিশেষভাবে পরিচিত। উদাহরণস্বরূপ, সরকারের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কৌশল, যা শুরুতে কেবল ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছিল, পরবর্তীতে তা বাস্তবেও প্রয়োগ হতে দেখা গেছে।

তবে, এই ধারাবাহিকের নির্মাণকালে কিছু বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছিল। অভিনেতা ক্রিস ল্যাংহামের একটি ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে ধারাবাহিকটি কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল।

‘দ্যা থিক অফ ইট’ শুধু একটি ধারাবাহিক ছিল না, বরং এটি ছিল ব্রিটিশ সমাজের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। এটি দর্শকদের রাজনীতি সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছিল। বর্তমানেও, এই ধারাবাহিকটি দর্শকদের কাছে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং জনপ্রিয়। এর কারণ, ক্ষমতা, দুর্নীতি, এবং মানুষের দুর্বলতা—এসব বিষয় আজও সমাজে বিদ্যমান।

‘দ্যা থিক অফ ইট’ তৈরি হওয়ার দীর্ঘ সময় পরেও, এর চরিত্র এবং গল্পগুলো দর্শকদের মনে গেঁথে আছে। এই ধারাবাহিকটি প্রমাণ করে, ভালো মানের ব্যঙ্গাত্মক রচনা সময়ের সীমানা পেরিয়েও মানুষের কাছে টিকে থাকে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *