ছেলের ক্ষতি করেছি? স্বামীর মৃত্যুর পর এক মায়ের ভয়ঙ্কর বিভ্রম!

শিরোনাম: স্বামীর আকস্মিক মৃত্যু: শোকের অন্ধকারে মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের শিকার আইরিশ অধ্যাপক

আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহরের বাসিন্দা মেরি অ্যান কেনি, ২০১৬ সালে আকস্মিকভাবে তার স্বামীর মৃত্যুর পর গভীর শোক ও মানসিক অস্থিরতার মধ্যে পড়েন। কেনির স্বামী জন, যিনি পেশায় একজন অধ্যাপক ছিলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

প্রিয়জনের এই অকাল প্রয়াণের ধাক্কা সামলাতে না পেরে তিনি এক জটিল মানসিক অবস্থার মধ্যে পতিত হন। শোকের এই সময়ে, চিকিৎসকের পরামর্শে কেনি কিছু ওষুধ সেবন করা শুরু করেন।

কিন্তুunfortuantely, ঔষধ সেবনের পর তার মধ্যে দেখা দেয় কিছু বিরূপ প্রতিক্রিয়া, যা পরবর্তীতে প্যারানোয়া বা সন্দেহপ্রবণতা এবং বিভ্রমের দিকে মোড় নেয়।

স্বামীর মৃত্যুর পর কেনি স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু তার মানসিক অবস্থা ক্রমশ আরও খারাপ হতে থাকে।

তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি সন্দেহ পোষণ করতে শুরু করেন এবং সবসময় একটি ভয়ের মধ্যে থাকতেন যে, কর্তৃপক্ষ তার সন্তানদের তার থেকে আলাদা করে দিতে পারে।

এই সময়ে, কেনির মনে হতে শুরু করে যে, তিনি হয়তো অনিচ্ছাকৃতভাবে তার সন্তানদের কোনো ক্ষতি করেছেন।

তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে ঔষধের কারণে শিশুদের কোনো ক্ষতি হয়েছে, এবং তিনি তাদের খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়েছেন।

এই ধারণাটি তাকে এতটাই আচ্ছন্ন করে ফেলে যে, তিনি সবসময় এই বিষয়টি নিয়েই চিন্তা করতে থাকেন।

অবশেষে, কেনি তার মনের এই উদ্বেগের কথা বন্ধুদের জানান এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন।

হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে, কেনি তার ভুল উপলব্ধির কথা স্বীকার করেন।

মানসিক চিকিৎসার অংশ হিসেবে, কেনিকে কিছু ওষুধ দেওয়া হয়, যার ফলে তার শারীরিক কিছু সমস্যা দেখা দেয়।

হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে কেনি তার সন্তানদের সাথে দেখা করার সুযোগ পেতেন, যা তার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।

চিকিৎসা শেষে কেনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করেন।

তিনি তার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লেখেন, যেখানে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

কেনির এই যাত্রা আমাদের দেখায় যে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা একটি গুরুতর বিষয় এবং এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং এই ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করা খুবই জরুরি।

মেরি অ্যান কেনির এই গল্প আমাদের শোক, মানসিক স্বাস্থ্য এবং প্রতিকূলতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

তার অভিজ্ঞতা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলায় উপযুক্ত চিকিৎসা ও সমাজের সমর্থন অপরিহার্য।

তথ্যসূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *