মহাকাশে স্বপ্ন! প্রতি ৪৫ মিনিটে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখছেন নভোচারীরা!

মহাকাশে প্রতি ৪৫ মিনিটে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত! আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (International Space Station – ISS) এমনই এক বিরল অভিজ্ঞতার সাক্ষী হচ্ছেন নভোচারীরা। নাসা-র দুই নভোচারী অ্যানা ম্যাকলেইন ও নিকোল আয়ার্স-এর দিন কাটে পৃথিবীর চারদিকে ৯০ মিনিটে একটি করে প্রদক্ষিণ করার মধ্যে, আর প্রতি ৪৫ মিনিট অন্তর তারা দেখেন এক একটি মনোমুগ্ধকর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য।

মহাকাশ স্টেশনে তাঁদের এই অভিযানটি বেশ উপভোগ করছেন তাঁরা। এই মিশনের অংশ হিসেবে জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা JAXA এবং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা Roscosmos-এর নভোচারীরাও রয়েছেন।

গত ১৪ই মার্চ স্পেসএক্স ড্রাগন ক্যাপসুল ও ফ্যালকন ৯ রকেটে করে তাঁরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছান। প্রায় ৬ মাসব্যাপী এই মিশনে তাঁদের প্রধান কাজ হলো বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালানো, স্পেসওয়াক বা মহাকাশ ভ্রমণ করা এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণ করা।

নভোচারী অ্যানা ম্যাকলেইন জানান, “এখানে থাকাটা সহজ, কিন্তু স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে থাকাটা কঠিন।” তিনি আরও বলেন, “আপনাকে কার্যত ৬ মাসের জন্য আপনার জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে হয়।”

মিশনে যাওয়ার আগে তাঁকে অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়েছে, যেমন – বিলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিশোধ করা হচ্ছে কিনা, ক্রেডিট কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই সব বিল পরিশোধ করা যাবে কিনা ইত্যাদি।

অন্যদিকে, নভোচারী নিকোল আয়ার্স-এর মতে, এই অভিজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, উৎক্ষেপণ ছিল অসাধারণ, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের হ্যাচে প্রবেশ করাটাও ছিল দারুণ, চমৎকার এবং আনন্দদায়ক।

এই মিশনের অংশ হিসেবে নভোচারীরা সম্প্রতি ৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে স্পেসওয়াক করেছেন। নাসা’র মতে, তাঁরা সফলভাবে মহাকাশ স্টেশনের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য একটি অ্যান্টেনা স্থাপন করেছেন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করেছেন।

এর মধ্যে ছিল বিদ্যুতের সংযোগ স্থাপন ও একটি মাইক্রোমেটিওরয়েড কভার থেকে স্ক্রু অপসারণ করা।

নভোচারীরা তাঁদের এই মিশনে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, মহাকাশচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও দলবদ্ধভাবে খাবার উপভোগ করেন, সিনেমা দেখেন এবং শরীরচর্চাও করেন।

তাঁরা জানান, মহাকাশে তাঁদের খাদ্য তালিকায় অনেক পদ থাকলেও পরিচিত স্বাদের অভাব রয়েছে। তাই পৃথিবীতে ফিরে আসার পর তাঁরা পছন্দের খাবারগুলো উপভোগ করতে চান, যেমন – একটি বড় বার্গার, সমুদ্রের তীরে বসে সূর্যের আলো উপভোগ করা কিংবা মুচমুচে চিপস-এর সাথে মজাদার চিজ সস-এর স্বাদ নেওয়া।

মহাকাশ গবেষণা শুধু একটি দেশের একার কাজ নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই ধরনের গবেষণা ভবিষ্যতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *