আকাশে হৃদরোগের উপসর্গ, দ্রুত চিকিৎসায় বাঁচল যাত্রীর প্রাণ।
গত মাসে উগান্ডা থেকে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামগামী একটি ফ্লাইটে এক যাত্রীর হৃদরোগের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তাঁর জীবন বাঁচালেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. টিজে ট্র্যাড।
ডা. ট্র্যাড, যিনি নিজেও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁর চিকিৎসার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দেন।
উগান্ডা থেকে ফিরছিলেন ডা. ট্র্যাড।
ফ্লাইটে থাকাকালীন এক যাত্রী বুকে ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেন এবং তাঁর শ্বাসকষ্ট হতে থাকে।
বিমানের কর্মীরা দ্রুত ডা. ট্র্যাডকে খবর দেন।
ছুটে গিয়ে তিনি দেখেন, ওই যাত্রীর শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। তিনি দ্রুত তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
ডা. ট্র্যাড জানান, যাত্রীটি সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তাঁর কাছে থাকা প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং একটি পকেট-আকারের ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি) যন্ত্র এক্ষেত্রে কাজে আসে।
ইসিজি, যা হৃদপিণ্ডের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ পরিমাপ করে, তা রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণে সাহায্য করে।
ডা. ট্র্যাডের নিজেরও হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল, তাই তিনি সবসময় এই যন্ত্রটি সাথে রাখেন।
চিকিৎসারত অবস্থায় ডা. ট্র্যাড প্রথমে বিমানের সিটগুলো একত্র করে একটি অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করেন।
এরপর রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
তিনি দ্রুত রোগীর রক্তে শর্করার মাত্রা এবং জমাট বাঁধার বিষয়টি পরীক্ষা করেন।
এরপর ১২-লিড ইসিজি ব্যবহার করে নিশ্চিত হন যে রোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
দ্রুত তিনি হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ দেন।
ডা. ট্র্যাডের ব্যক্তিগত ইসিজি কার্ডের মাধ্যমে রোগীর হৃদস্পন্দন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এর মাধ্যমে হৃদরোগের কারণে হওয়া অস্বাভাবিক স্পন্দন বা অ্যারিথমিয়া শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
এই যন্ত্রটি রোগীর হৃদরোগের পরবর্তী অবস্থা পর্যবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পরে, বিমানটি নিরাপদে আমস্টারডামের স্কিপল বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সেখানে আগে থেকেই একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত ছিল এবং দ্রুত ওই যাত্রীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালে পরীক্ষার পর জানা যায়, ওই যাত্রীর হার্ট অ্যাটাক হয়নি।
তবে ডা. ট্র্যাডের দ্রুত এবং সঠিক চিকিৎসার কারণে হয়তো বড় কোনো বিপদ ঘটেনি।
ডা. ট্র্যাডের এই তৎপরতা বুঝিয়ে দেয়, জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসা প্রদানের গুরুত্ব কতখানি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন