যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এবং দেশটির বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বিভাজন নিয়ে নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে এই বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, যা ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতির উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রিত মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রস্তাবিত বাজেট বিলে আদালতের ক্ষমতা সীমিত করার প্রস্তাব এসেছে, যা এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করার ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অভিবাসন বিষয়ক কিছু মামলায় আদালতের রায়কে কার্যত অগ্রাহ্য করা হয়েছে।
এমনকি, আদালত কর্তৃক বহাল থাকা একটি রায়ের পরও, হোয়াইট হাউস থেকে ঘোষণা করা হয় যে, “সে আর ফিরবে না”। এই ধরনের ঘটনাগুলো বিচার বিভাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে ঘাটতি হিসাবে দেখা হচ্ছে।
আদালত অবমাননার অভিযোগেও পড়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। আদালতের আদেশ অমান্য করার কারণে, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তবে, প্রস্তাবিত বাজেট বিলটি পাস হলে, সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা কঠিন হয়ে পড়বে। বিলটি আইনে পরিণত হলে আদালত, সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে না, যদি বাদীপক্ষ বন্ড পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই ধরনের পদক্ষেপ ক্ষমতার বিভাজন নীতির লঙ্ঘন। তারা মনে করেন, এই ধরনের প্রবণতা আইনের শাসনের প্রতি হুমকি স্বরূপ।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসন আদালতের রায় মেনে চলার কথা বলেছে, তবে তাদের কিছু কার্যক্রম বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই সংকট শুধু একটি রাজনৈতিক বিষয় নয়, বরং এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপনকারী নীতিগুলোর প্রতি গভীর উদ্বেগের কারণ।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের কিছু বিচারপতিও এই বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং আদালতের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।
যদিও এই বিতর্কের চূড়ান্ত পরিণতি এখনো অজানা, তবে এটি স্পষ্ট যে, ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপগুলো বিচার বিভাগের ক্ষমতা এবং স্বাধীনতাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
এই পরিস্থিতিতে, আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার গুরুত্ব আরও বেড়েছে। ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি একটি গণতান্ত্রিক সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এই নীতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা না হলে, তা সমাজের স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি ডেকে আনতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস