ছেলের চোখে পিতার ছায়া: এক পিতার গল্প যা কাঁদাবে!

“আমার বাবার ছায়া” : ১৯৯৩ সালের নাইজেরিয়ার পটভূমিতে পিতৃত্বের এক মর্মস্পর্শী কাহিনি।

আকিনোলা ডেভিস জুনিয়র পরিচালিত “আমার বাবার ছায়া” চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে, যা ১৯৯৩ সালের নাইজেরিয়ার অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক পিতার সঙ্গে দুই পুত্রের সম্পর্কের গল্প নিয়ে নির্মিত। ছবিটি ইতোমধ্যে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে এবং দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

ছবিটির গল্পে দেখা যায়, ফোলা নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন পর অপ্রত্যাশিতভাবে তার দুই ছেলের কাছে ফিরে আসেন। তিনি তাদের নিয়ে লাগোসে যান, যেখানে তিনি কিছু বকেয়া বেতন আদায় করতে চান। এই যাত্রাপথে ছেলেরা তাদের বাবার জীবন এবং সংগ্রামের সঙ্গে পরিচিত হয়। একই সঙ্গে তারা জানতে পারে সেই সময়ের নাইজেরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কে।

ছবিটিতে ফোলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোপে দিরিসু। এছাড়াও, গডউইন চিমেরি এগবো এবং চিবিউকে মার্ভেলাস এগবো নামের দুই তরুণ অভিনেতা ফোলার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

১৯৯০-এর দশকে নাইজেরিয়া ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতার এক চরম সময়। সামরিক শাসনের দশ বছর পর, দেশটিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছিল। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে সমাজের বিভিন্ন স্তরে তৈরি হয় চরম বিশৃঙ্খলা। “আমার বাবার ছায়া” ছবিতে সেই সময়ের টানাপোড়েন এবং অনিশ্চয়তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

ছবিটি মূলত পিতৃত্ব, ভালোবাসা, বিচ্ছেদ এবং পরিবারের বন্ধনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলে। বাবার অনুপস্থিতি কি ভালোবাসারই নামান্তর? নাকি ভালোবাসার গভীরতা উপলব্ধি করতে হলে কিছু ক্ষেত্রে বিচ্ছেদ অপরিহার্য? এমন কিছু প্রশ্ন দর্শককে নাড়া দেয়।

পরিচালক ডেভিস জুনিয়র, তাঁর সিনেমায় একটি শিশুর দৃষ্টি থেকে বাবার প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। বাবার দুর্বলতা, সমাজের কঠিন বাস্তবতা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন—এসব কিছুই ক্যামেরার মাধ্যমে জীবন্ত হয়ে উঠেছে।

ছবিটি বাংলাদেশের দর্শকদের কাছেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হতে পারে, কারণ পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক টানাপোড়েন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা—এসব বিষয় আমাদের সমাজে খুবই পরিচিত। “আমার বাবার ছায়া” সেই অর্থে, একটি সার্বজনীন গল্প যা বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *