মাথায় গুলি, তবুও ভয়ঙ্কর! জোসেফ ভ্যাচারের নৃশংসতা!

জোসেফ ভ্যাশার: এক বিস্মৃত সিরিয়াল কিলারের অজানা কাহিনী

উনিশ শতকের শেষভাগে ফ্রান্সে এক কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারের আবির্ভাব ঘটেছিল, যার নাম জোসেফ ভ্যাশার। নৃশংসতার দিক থেকে অনেকে তাকে “ফ্রেঞ্চ রিপার” বা “ছোট রাখালদের হত্যাকারী” হিসাবেও চিনে। তার অপরাধের তালিকা এতটাই দীর্ঘ ছিল যে, অনেক ক্ষেত্রে তিনি জ্যাক দ্য রিপারের চেয়েও এগিয়ে ছিলেন, যিনি আজও সারা বিশ্বে আতঙ্কের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

ভ্যাশার নামটি অনেকের কাছেই অজানা। এর কারণ সম্ভবত, তিনি ধরা পড়েছিলেন এবং ১৮৯৮ সালে গিলোটিনে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। অন্যদিকে জ্যাক দ্য রিপারকে কখনোই ধরা যায়নি, ফলে তার রহস্য আজও উন্মোচিত হয়নি। লেখক ডগলাস স্টার, যিনি ভ্যাশার এবং ফরেনসিক সাইন্সের উত্থান নিয়ে একটি বই লিখেছেন, তার মতে, “রিপারের ঘটনায় কোনো সমাধান আসেনি, তাই আজও মানুষের মধ্যে কৌতূহল বিদ্যমান। কিন্তু ভ্যাচারের ঘটনা ছিল ভিন্ন, এখানে খুনের কারণ নিয়ে কোনো প্রশ্ন ছিল না, বরং মানুষ বুঝতেই পারেনি কেন তিনি এমনটা করেছিলেন।”

ভ্যাশার কেন এমন নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিলেন, তা আজও একটি রহস্য। তার বিচার চলাকালীন সময়ে, তার আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন যে, সম্ভবত ছোটবেলায় একটি পাগলা কুকুরের কামড় থেকেই তার মধ্যে এই “হত্যাকাণ্ডের উন্মাদনা” সৃষ্টি হয়েছিল। আবার অনেকের মতে, এক ব্যর্থ প্রেমের সম্পর্কও এর কারণ হতে পারে। জানা যায়, প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর তিনি নিজের মাথায় গুলি করেছিলেন, কিন্তু সৌভাগ্যবশত তিনি বেঁচে যান। গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে তার মুখ বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। ভ্যাশার নিজেই নিজেকে “সমাজ-বিরোধী” এবং “সন্ত্রাসী” হিসেবে পরিচয় দিতেন।

ভ্যাশার কমপক্ষে ১১ জন মানুষকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছিলেন। তবে ফরাসি আদালতের নথি অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যার অভিযোগ ছিল। তার শিকারদের মধ্যে নারী, পুরুষ এবং শিশু ছিল, যাদের বয়স ৭ থেকে ৬৮ বছরের মধ্যে। তিনি প্রায়শই ফ্রান্সের গ্রামাঞ্চলে তার শিকারদের খুঁজে বের করতেন।

জোসেফ ভ্যাশার-এর ঘটনাটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করে যখন তিনি এক কৃষককে হত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু গ্রামবাসীরা দ্রুত তাকে ধরে ফেলে এবং পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ভ্যাশার তার শিকারদের ধর্ষণ করতেন এবং তাদের অঙ্গহানি করতেন। এই ঘটনার মাধ্যমে ফরেনসিক বিজ্ঞান এবং অপরাধ জগতের ইতিহাসে ভ্যাশার একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *