কেভিন স্পেসিকে পুরষ্কার: ফিরে আসার পথে?

কানে চলচ্চিত্র উৎসবের ইতিহাসে অন্যতম বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিতে যাচ্ছেন অভিনেতা কেভিন স্পেসি। আগামী সপ্তাহে কান-এ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘বেটার ওয়ার্ল্ড ফান্ড’-এর দশম বর্ষপূর্তি গালা ডিনারে তাকে আজীবন সম্মাননা জানানো হবে।

এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই চলচ্চিত্র জগতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। হলিউডের খ্যাতিমান এই অভিনেতা, যিনি একসময় অভিনয় প্রতিভার জন্য অস্কার জিতেছেন, তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠার পর অনেকটা আড়ালে চলে যান।

২০১৭ সাল থেকে ত্রিশের অধিক পুরুষ স্পেসির বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও অসদাচরণের অভিযোগ এনেছেন। এর ফলস্বরূপ, নেটফ্লিক্স তার বায়োপিক তৈরির পরিকল্পনা বাতিল করে এবং জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘হাউজ অফ কার্ডস’ থেকে তাকে বাদ দেয়।

যদিও তিনি যুক্তরাজ্যের একটি আদালতে যৌন হয়রানির অভিযোগ থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন, কিন্তু অভিনেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো এখনো চলচ্চিত্র জগতে আলোচনার বিষয়। কান চলচ্চিত্র উৎসবের ইতিহাসে, বিশেষ করে #MeToo আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, এমন সম্মাননা প্রদান তাৎপর্যপূর্ণ।

অনেকেই মনে করছেন, এই পুরস্কার স্পেসির অভিনয় জীবনে ফেরার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, অনেকেই এর সমালোচনা করছেন। তাদের মতে, এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত, #MeToo আন্দোলনের প্রতি এক ধরনের অশ্রদ্ধা।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে আগত অনেক দর্শক এই ঘটনায় হতাশ এবং ক্ষুব্ধ হয়েছেন। অনুষ্ঠানটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের আনুষ্ঠানিক অংশ না হলেও, কান-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ হোটেলে এর আয়োজন করা হচ্ছে।

সমালোচকরা বলছেন, এর মাধ্যমে যেন স্পেসির পুনরুত্থানের পথ তৈরি করা হচ্ছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, কেন এমন একজন ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করার জন্য বেছে নেওয়া হলো, যেখানে আরও অনেক অভিনেতা রয়েছেন।

এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ব্র্যান্ড ও সংকট ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মার্ক বোরকোওস্কি জানান, কান এবং ফরাসি চলচ্চিত্র জগৎ দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত ব্যক্তিদের সমর্থন জুগিয়েছে।

তিনি বলেন, এই পুরস্কার স্পেসির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এর মাধ্যমে তিনি আবার তার অভিনয় জীবন ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে, অনেকের মনে এই প্রশ্ন রয়ে গেছে যে, সমাজের চোখে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তির এভাবে ফিরে আসাটা কতটুকু যৌক্তিক?

এই ঘটনার মাধ্যমে কি তবে #MeToo আন্দোলনের গুরুত্ব খানিকটা হলেও কমে যাচ্ছে? বিষয়টি এখন চলচ্চিত্র প্রেমীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *