গর্ভবতী হওয়ার পর বন্ধুদের ভালোবাসায় সিক্ত তরুণী, অতঃপর…

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রিহো মারুয়ামা, যিনি সিনিয়র ইয়ারে থাকাকালীন মা হওয়ার অপ্রত্যাশিত খবরে কিছুটা হতবাক হয়েছিলেন। কিন্তু জীবনের এই নতুন অধ্যায়ে, তিনি এবং তার স্বামী, কিয়ালি’ইহোলো’ওকোয়া মারুয়ামা, তাদের সন্তানের বেড়ে ওঠাকে একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতায় পরিণত করেছেন।

তারা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, ক্যাম্পাসের বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলেছেন।

রিহো এবং কিয়ালি’ইহোলো’ওকোয়া দুজনেই খেলাধুলা ভালোবাসতেন। রিহো যখন জানতে পারেন যে তিনি মা হতে চলেছেন, তখন তিনি কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন।

কিন্তু তাদের ভালোবাসার বন্ধন এবং ভবিষ্যতের স্বপ্ন তাদের কঠিন সময়েও অবিচল থাকতে সাহায্য করেছে। তারা তাদের মেয়ের নাম রেখেছিলেন “নামী”।

ছাত্রজীবনে সন্তানের জন্ম দেওয়া সহজ ছিল না। পরীক্ষার চাপ, ক্লাস, এবং খণ্ডকালীন চাকরির পাশাপাশি, সন্তানের দেখাশোনা করা ছিল বিশাল এক চ্যালেঞ্জ।

তবে রিহো এবং কিয়ালি’ইহোলো’ওকোয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল তাদের বন্ধুদের এক বিশাল দল। তারা একে অপরের প্রতি নির্ভরশীল ছিলেন, এবং সবাই মিলে নামীর বেড়ে ওঠাকে আনন্দময় করে তুলেছিল।

তাদের বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের “কলেজ কাকিমা” এবং “কাকা” হিসেবে পরিচিত ছিল। তারা নামীর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও যত্ন দেখাতেন।

ক্যাম্পাসের এই সমর্থন ব্যবস্থা তাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ ছিল। নামীর বেড়ে ওঠার পরিবেশে যেমন ছিল পড়াশোনার ব্যস্ততা, তেমনই ছিল বন্ধুত্বের উষ্ণতা।

রিহোর ভাষায়, “আমাদের পরিস্থিতি আগে থেকে পরিকল্পনা করা ছিল না, তবে সবকিছু সুন্দরভাবে হয়েছে।” তিনি ব্যায়াম বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং বর্তমানে মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করছেন।

অন্যদিকে, কিয়ালি’ইহোলো’ওকোয়া জরুরি সেবা এবং প্যারামেডিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর, ক্যারিয়ারের আরও ভালো সুযোগের জন্য পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তাদের জীবনযাত্রা অনেকের কাছেই হয়তো একটু ভিন্ন মনে হতে পারে। তবে এই পরিবেশে নামীর বেড়ে ওঠা সত্যিই অসাধারণ।

রিহো বলেন, “নামী সবার ভালোবাসায় বেড়ে উঠছে। বন্ধুদের কাছে সে একটু বেশিই আদুরে।”

কাজের চাপ এবং ক্লাসের সময়সূচী মাঝে মাঝে এলোমেলো হয়ে গেলেও, তারা একটি রুটিন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

রিহো জানান, “নামী দিনে এখনও দুবার ঘুমায় এবং সকালে আমরা যখন কাজ করি, তখন সে শান্ত থাকে।”

অবশ্যই, এই পথটি সহজ ছিল না। পড়াশোনার সময় ছোট্ট নামীকে সামলানো, এবং খেলাধুলার প্রশিক্ষণ পুনরায় সাজানো—এসব করতে হয়েছে তাদের।

রিহো বলেন, “আমাদের কিছু স্বাধীনতা ত্যাগ করতে হয়েছে। আমরা আগে একসঙ্গে প্রশিক্ষণ করতাম, এখন আমরা পালা করে নামীর দেখাশোনা করি।”

তবে, এই ত্যাগগুলো তাদের জীবনের আনন্দকে কমাতে পারেনি। বন্ধুদের নিয়মিত দেখা করতে আসা, এবং সন্তানদের প্রতি তাদের ভালোবাসাই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।

রিহো বলেন, “আমাদের বন্ধুরা আমাদের সীমানাগুলো বোঝে এবং সব সময় আমাদের অনুমতি নিয়েই কাজ করে।”

রিহো এবং কিয়ালি’ইহোলো’ওকোয়া তাদের বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে প্রতি সপ্তাহে পারিবারিক নৈশভোজের আয়োজন করেন।

তারা বিশ্বাস করেন, সন্তান জন্ম দেওয়া তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। রিহো বলেন, “সন্তান মানুষ করা কঠিন, তবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস এবং একটি শক্তিশালী সহায়ক দলের মাধ্যমে এটি একটি সুন্দর যাত্রায় পরিণত হয়।”

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *