উপহারের বোঝা: যখন উদারতা আর্থিক উদ্বেগের কারণ হয়
সমাজের চোখে, আত্মীয়-স্বজনের ছেলেমেয়েদের জন্মদিনে উপহার দেওয়াটা যেন এক প্রকারের সামাজিক রীতি। কিন্তু এই রীতির চাপে পরে যদি কারো আর্থিক ক্ষতি হয়, তখন?
সম্প্রতি এমনই এক সমস্যার কথা জানা গেছে, যেখানে এক নারী, যিনি নিজে মা নন, অন্যান্য ছেলেমেয়েদের জন্য উপহার কিনতে গিয়ে আর্থিক অস্বস্তিতে পড়েছেন।
যুক্তরাজ্যের একটি জনপ্রিয় অনলাইন ফোরাম, যেখানে অভিভাবকেরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন, সেই ‘মামসনেট’-এ (Mumsnet) নিজের এই অভিজ্ঞতার কথা জানান ওই নারী। তিনি জানান, তার আট বছর বয়সী এক গডডটার (ধর্ম-কন্যা) আছে, এবং প্রতি জন্মদিন ও বড়দিনে তিনি তাকে উপহার দেন।
কিন্তু এখন তিনি বুঝতে পারছেন, মেয়েটির মা ও তার মধ্যে আগের মতো দেখা হয় না, দেখা হলেও তা হয় উপহার দেওয়ার সময়।
শুধু তাই নয়, ওই নারী আরও জানান যে, তিনি তার এক বন্ধুর দুটি সন্তানের জন্যও নিয়মিত উপহার কেনেন। তিনি ভেবেছিলেন, বন্ধু ও তার গডডটারের মা, তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য উপহারের আদান-প্রদান করেন।
কিন্তু পরে জানতে পারেন, তাদের মধ্যে এমন কোনো চুক্তি হয়নি। এতে করে উপহার দেওয়ার এই ধারা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।
ওই নারী আরও জানান, তার আরও দুজন ভাইঝি, আরও দুজন গডডটার এবং এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের সম্প্রতি একটি সন্তান হয়েছে। তিনি বলেন, তার এই আত্মীয় সবসময় তার ভাইঝিদের উপহার দিয়ে এসেছেন।
পরিবারের শিশুদের জন্য উপহার দেওয়ার এই রীতি তিনি উপভোগ করেন, তবে অন্যদের জন্য উপহার কিনতে গিয়ে এখন তার আর্থিক কষ্ট হচ্ছে। তিনি জানান, উপহারের পেছনে তার অনেক টাকা খরচ হয়।
এই পরিস্থিতিতে, তিনি ফোরামের অন্যান্য সদস্যদের পরামর্শ চান। ফোরামের অনেকেই মনে করেন, উপহারের পরিমাণ কমানোর বিষয়ে তার দ্বিধা করা উচিত নয়।
তারা তাকে পরামর্শ দেন, শিশুদের মায়েদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে। কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছেন, একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর উপহার দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া যেতে পারে।
অনেকে আবার মনে করেন, যেহেতু ভাইঝিরা তার পরিবারের সদস্য, তাই তাদের উপহার দেওয়া চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও, উপহারের বাইরেও শিশুদের খুশি করার আরও অনেক উপায় আছে, যেমন – তাদের নিয়ে পার্কে ঘুরতে যাওয়া অথবা খেলাধুলার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
তথ্যসূত্র: পিপল