প্রতিদিনের সাধারণ ঘটনার মাঝে আনন্দ খুঁজে নেওয়ার এক নতুন পথের সন্ধান দিয়েছেন লেখক। জীবনকে নতুন করে দেখার এই উপায় আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী হতে পারে, তাই নিয়ে এই আলোচনা।
আমরা সবাই জীবনের জটিলতা এবং উদ্বেগের সঙ্গে পরিচিত। চারপাশে এত বেশি কিছু ঘটছে যে অনেক সময় মনে হয়, প্রতিদিনের সামান্য ঘটনাগুলোও যেন এক একটি বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রতিদিনকে প্রথম দিনের মতো করে অনুভব করার ধারণা আমাদের মনে নতুন করে আনন্দের জন্ম দিতে পারে।
ক্যান্সার survivor সুলেইকা জাওয়াদ এই ধারণাটি দিয়েছেন। তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, প্রতিদিনকে শেষ দিনের মতো করে কাটানোর পরিবর্তে, প্রতিটি দিনকে প্রথম দিনের মতো করে দেখা উচিত। এর মাধ্যমে জীবনের প্রতি আমাদের কৌতূহল বাড়ে এবং অনেক কিছুই নতুন করে অনুভব করা যায়।
লেখিকা এমা বেডিংটন, যিনি একজন কলামিস্ট, এই ধারণাটি নিয়ে পরীক্ষা করেছেন। তিনি তার দৈনন্দিন জীবনের কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে এই পরীক্ষা চালান। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নাস্তার টেবিলে রাখা রুটিটিকে তিনি নতুন চোখে দেখেন, যেন এই প্রথমবার তিনি এটির স্বাদ নিচ্ছেন।
এরপর অফিসের বিল অথবা ওয়াসার বিল হাতে পাওয়ার পর স্বাভাবিক বিরক্তিকে দূরে সরিয়ে রেখে তিনি সেটিকে নতুন কিছু হিসেবে দেখার চেষ্টা করেন। এমনকি, মাঝে মাঝে কল খুলে দিলে পানি পড়ার শব্দকেও তিনি অন্য দৃষ্টিতে অনুভব করার চেষ্টা করেন।
দন্ত চিকিৎসক এর কাছে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকের কাছেই খুব একটা সুখকর নয়। কিন্তু লেখিকা এখানেও তার নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ করেন। ডাক্তারের চেম্বারে বসে তিনি দাঁতের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ছবি গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখেন।
এরপর যখন ডেন্টিস্ট তার দাঁত পরিষ্কার করছিলেন, তখন তিনি সেই অনুভূতিকে নতুনভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেন, যেন এই অভিজ্ঞতাটি তার জীবনে প্রথমবার হচ্ছে।
এই পরীক্ষার ফলাফল ছিল বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। লেখিকা উল্লেখ করেছেন, জীবনের প্রতি এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তাকে অনেক বেশি শান্ত থাকতে সাহায্য করেছে। সাধারণ ঘটনাগুলোও তার কাছে এখন আর বিরক্তিকর নয়, বরং কিছুটা উপভোগ্য।
মানসিক চাপ কমিয়ে জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব আনতে এই পদ্ধতি বেশ কার্যকর হতে পারে। সুতরাং, আপনিও চেষ্টা করতে পারেন প্রতিদিনকে নতুন করে অনুভব করার।
হয়তো এতে করে জীবনের অনেক কঠিন পরিস্থিতিও আপনার কাছে সহজ হয়ে উঠবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian