বৃক্ষের মতোই, ধ্বংস হচ্ছে মানুষের জীবন! সরকার নীরব কেন?

শিরোনাম: যুক্তরাজ্যের মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা কাটছাঁট: বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা?

সাম্প্রতিক সময়ে, যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস)-এ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসা পরিষেবা কাটছাঁট নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে, আমাদের মনে রাখতে হবে, উন্নত দেশগুলোতেও মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা সহজলভ্য করা একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাজ্যের এই পরিস্থিতি, বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হতে পারে।

যুক্তরাজ্যে, মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমানোর কারণে, সাইকোথেরাপি (বিশেষ ধরনের কাউন্সেলিং) এবং অন্যান্য সহায়ক থেরাপি পরিষেবাগুলো সীমিত করা হচ্ছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই পদক্ষেপ মানসিক রোগীদের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এই ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি, মাদকাসক্তি এবং পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার মতো ঘটনাগুলো আরও বাড়তে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সাইকোথেরাপি মানুষের মানসিক কষ্টের কারণগুলো বুঝতে এবং তাদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সহায়তা করে। এটি মানুষকে তাদের জীবনের সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং সামগ্রিক সুস্থ জীবন যাপনে সহায়তা করে। যখন এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো কাটছাঁট করা হয়, তখন সমাজের দুর্বল অংশের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়। আমাদের দেশে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা এখনো অনেক কম। পর্যাপ্ত সংখ্যক মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসা কেন্দ্রের অভাব রয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্যখাতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিষেবা এখনো সীমিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি এক লাখে মাত্র ০.২২ জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। পর্যাপ্ত কাউন্সেলিং এবং থেরাপি পরিষেবাও সহজলভ্য নয়।

যুক্তরাজ্যের এই পরিস্থিতি থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। মানসিক স্বাস্থ্য খাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করা এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। সরকারি এবং বেসরকারি উভয় পর্যায়েই মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, বিশেষজ্ঞ তৈরি এবং উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে নজর দিতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্যকে শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্ব দিতে হবে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিষেবাগুলোকে সকলের জন্য সহজলভ্য করতে পারলে, একটি সুস্থ ও সুখী সমাজ গড়া সম্ভব।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *