আতঙ্কের সৃষ্টি! পরমাণু বিতর্ক: ব্রিটেনের বিরুদ্ধে তেহরানের বিস্ফোরক পদক্ষেপ!

ইরান ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে কয়েকজন ইরানি নাগরিককে আটক করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে তেহরান (Tehran) –এ নিযুক্ত ব্রিটিশ চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে (দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।

ইরান সরকারের অভিযোগ, যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপ ‘সন্দেহজনক’ এবং ‘অন্যায়ভাবে’ নেওয়া হয়েছে। তাদের মতে, আটককৃত ইরানি নাগরিকদের আটকের বিষয়ে সময় মতো তেহরানকে জানানো হয়নি এবং কনস্যুলার অ্যাক্সেস (Consular Access) প্রদানের ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন মানা হয়নি।

ইরানের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, ব্রিটিশ সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ইরানের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির প্রমাণ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে।

আটককৃতদের মধ্যে মোস্তফা সেপাহভান্দ, ফারহাদ জাভাদি মানেশ এবং শাপোর কালেই খানি নূরী সহ আরও কয়েকজন রয়েছেন।

ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তাদের শুনানির পর কেন্দ্রীয় ক্রিমিনাল কোর্টে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী জুন মাসের শুরুতে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা পারমাণবিক চুক্তি বিষয়ক আলোচনা নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

উল্লেখযোগ্য, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও চীনের মধ্যে একটি পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকে এই চুক্তিটি আবার সক্রিয় করার বিষয়ে আলোচনা চলছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।

যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি (যাদের E3 হিসেবেও উল্লেখ করা হয়) ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

তাদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (International Atomic Energy Agency – IAEA) সঙ্গে ইরান পর্যাপ্ত সহযোগিতা করছে না।

অন্যদিকে, ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা তাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।

ইরানের কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ করতে তারা প্রস্তুত, তবে তাদের দাবিগুলো বাস্তবসম্মত হতে হবে।

এই পরিস্থিতিতে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশেষ করে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগে ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ বাড়ছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *