বিদায় কনসার্ট! মঞ্চ ছাড়লেন অ্যালান জ্যাকসন, ভক্তদের চোখে জল!

বিখ্যাত কান্ট্রি সঙ্গীত শিল্পী অ্যালান জ্যাকসন, যিনি গত তিন দশক ধরে সঙ্গীত জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত, সম্প্রতি তাঁর দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কনসার্ট সফর জীবনের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন।

গত ১৭ই মে, মিলওয়াকিতে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘লাস্ট কল: ওয়ান মোর ফর দ্য রোড’ শীর্ষক কনসার্টের মাধ্যমে তিনি তাঁর চূড়ান্ত সফরে ইতি টানেন।

অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে, ৬৪ বছর বয়সী এই কিংবদন্তী শিল্পী জানান, তিনি ধীরে ধীরে তাঁর কনসার্ট জগৎ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন।

শ্রোতাদের ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, “আমি অভিভূত। আপনারা আমাকে কাঁদিয়ে ফেলবেন।”

অ্যালান জ্যাকসন তাঁর বক্তব্যে ৪০ বছর আগের এক স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন, যখন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী একটি পুরনো গাড়িতে করে গানের স্বপ্ন নিয়ে ন্যাশভিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলেন।

তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আমি আমেরিকান স্বপ্নকে সত্যি করেছি।

সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমি ধন্য। আমার গানকে এত ভালোবাসার জন্য, আমার কনসার্টগুলোতে আসার জন্য আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।”

জ্যাকসনের এই বিদায়ের পেছনে একটি বড় কারণ হলো তাঁর স্বাস্থ্যগত সমস্যা।

প্রায় চার বছর আগে তিনি ‘শার্কোট-ম্যারি-টুথ’ নামক একটি বংশগত স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হন।

এই রোগের কারণে তাঁর শরীরের স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে, যা তাঁর মঞ্চে পারফর্ম করার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জ্যাকসন তাঁর এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।

তিনি বলেন, “আমি আমার ভক্তদের জানাতে চাই যে, গত কয়েক বছর ধরে অথবা ভবিষ্যতে আমার কোনো কনসার্টে তাঁরা যদি আমাকে দেখেন, তাহলে যেন বুঝতে পারেন আমার শারীরিক অবস্থার কারণে এমনটা হচ্ছে।

আমি মঞ্চে মাতাল হয়ে আছি—এমনটা যেন কেউ না ভাবেন, কারণ আমার চলাফেরায় এবং ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা হচ্ছে।”

তবে, এই রোগ মারাত্মক না হলেও, জ্যাকসন স্বীকার করেছেন যে, এটি তাঁর পারফর্মেন্সের ওপর প্রভাব ফেলবে এবং হয়তো ভবিষ্যতে তাঁকে কনসার্ট করা কমিয়ে দিতে হবে।

যদিও তিনি কনসার্ট সফর থেকে অবসর নিচ্ছেন, তবে ভক্তদের জন্য রয়েছে একটি বিশেষ ঘোষণা।

মিলওয়াকির কনসার্টে তিনি জানান, আগামী গ্রীষ্মে ন্যাশভিলে একটি বড় পরিসরে তাঁর শেষ কনসার্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, “যেখান থেকে আমার গানের যাত্রা শুরু, সেখানেই আমি আমার শেষ কনসার্ট করতে চাই।

ন্যাশভিলেই আমার সবকিছু শুরু হয়েছিল।”

জ্যাকসনের সঙ্গীত জীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ, সম্প্রতি তিনি ‘এসিএম অ্যাওয়ার্ডস’-এ ‘অ্যালান জ্যাকসন লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন।

পুরস্কার গ্রহণকালে তিনি বলেন, “আমি গানের একটি ঝুলি নিয়ে ন্যাশভিলে এসেছিলাম এবং একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম।

এত বছর পর এই সম্মান পাওয়াটা আমার জন্য অবিশ্বাস্য।

আমি সবসময় সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই, যাঁরা আমার জীবন ও ক্যারিয়ারের অংশ হয়ে ছিলেন।”

অ্যালান জ্যাকসন তাঁর গান এবং সঙ্গীতের প্রতি উৎসর্গীকৃত মনোভাবের জন্য সারা বিশ্বে সুপরিচিত।

তাঁর এই বিদায় সঙ্গীত জগৎ-এর জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *