রাশিয়ার সরকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে ‘অবাঞ্ছিত সংস্থা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এর ফলে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে এই সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করা এখন নিষিদ্ধ।
সোমবার রাশিয়ার প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, অ্যামনেস্টির লন্ডন কার্যালয় ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের দ্বারা অর্থায়িত ‘রুশ-বিরোধী’ প্রকল্প তৈরি করার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অ্যামনেস্টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি “এলাকায় সামরিক সংঘাত বাড়ানোর জন্য সবকিছু করছে”, যার মধ্যে “আমাদের দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতার ওপর জোর দেওয়া” অন্যতম।
রাশিয়ার কর্তৃপক্ষের দাবি, অ্যামনেস্টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষার নামে মূলত ইউক্রেনকে সমর্থন জানাচ্ছে।
এই ঘোষণার ফলে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এখন থেকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে কোনো কাজ করতে পারবে না। এমনকি, যারা এই সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করবে বা তাদের সমর্থন করবে, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হতে পারে।
যারা সামাজিক মাধ্যমে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন শেয়ার করবে, তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করা ও সেগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য পরিচিত।
অন্যায়ভাবে কারাবন্দীদের মুক্তির দাবিতেও তারা কাজ করে থাকে। মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানো এবং নির্যাতন প্রতিরোধের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৭ সালে এই সংগঠনটি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করে।
সংস্থাটি ইউক্রেন যুদ্ধের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি গাজা উপত্যকা ও ইসরায়েলি বর্ণবাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছে।
এছাড়া, সুদানে সংঘটিত নৃশংসতা সহ বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তারা তুলে ধরেছে।
পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণে রাশিয়া মানবাধিকার সংস্থা এবং সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোর ওপর দমন-পীড়ন জোরদার করেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওপর এই নিষেধাজ্ঞাও সেই পদক্ষেপেরই অংশ।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা