বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড! মৃতের সংখ্যা বেড়ে কত?

ভয়াবহ ঝড়-বৃষ্টি: যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বিপর্যস্ত জনজীবন

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে সম্প্রতি বয়ে যাওয়া শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ও ঝড়ের কারণে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার আঘাত হানা টর্নেডোর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেনটাকি রাজ্য।

এছাড়া মিসৌরি এবং ভার্জিনিয়াতেও ঝড়ের তাণ্ডবে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী দিনগুলোতেও এই অঞ্চলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে।

কেনটাকির লন শহরে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা তাদের জিনিসপত্র রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন।

ধ্বংসস্তূপ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন তারা। স্থানীয় বাসিন্দা জ্যাক উইলসন জানিয়েছেন, তার বাবা-মায়ের বাড়িও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা দ্রুত সেখানে গিয়েছিলাম, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। যা কিছু বাঁচানো যায়, সেগুলোর সুরক্ষার চেষ্টা করছি।”

কেনটাকিতে শুক্রবারের ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে এবং গুরুতর আহত হয়েছে ১০ জন। কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

বর্তমানে তিনজন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার জানিয়েছেন, ফেডারেল সাহায্য চেয়ে আবেদন করা হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের জন্য কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।

অন্যদিকে, মিসৌরির সেন্ট লুইসে ঝড়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৩৮ জন। শহরের মেয়র কারা স্পেন্সার জানিয়েছেন, ঝড়ে পাঁচ হাজারের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উৎসুক জনতার আনাগোনা কমাতে অনুরোধ করেছেন। এছাড়া, সেন্ট লুইসের উপকণ্ঠে আঘাত হানা একটি টর্নেডোর বাতাসের বেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫০ মাইল (২৪১ কিলোমিটার)।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী দিনগুলোতে টেক্সাস থেকে শুরু করে কানসাস ও ওকলাহোমা পর্যন্ত অঞ্চলে আবারও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, দক্ষিণ টেক্সাসে তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যেতে পারে, যা সেখানকার জনজীবনকে আরও কঠিন করে তুলবে।

একইসঙ্গে, ইডাহো এবং মন্টানার পশ্চিমাঞ্চলে এক ফুটের বেশি তুষারপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায়ই টর্নেডোর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগে যেখানে “টর্নেডো অলি” নামে পরিচিত ওকলাহোমা, কানসাস ও টেক্সাসে এই ধরনের দুর্যোগ বেশি হতো, সেখানে বর্তমানে ঘনবসতিপূর্ণ এবং গাছপালা সমৃদ্ধ দক্ষিণে এর প্রবণতা বাড়ছে।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কেনটাকিতে ১৮৯০ সালের মার্চ মাসে একটি শক্তিশালী টর্নেডোতে ৭৬ জন নিহত হয়েছিল। এছাড়া, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে হওয়া একটি টর্নেডোতে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছিল, যাতে ৫৭ জন নিহত এবং ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছিল।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *