মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে (Congress) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ একটি নীতি বিল পাশ করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন স্পিকার মাইক জনসন। তবে বিলটি নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে, যার ফলে বিলটি এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত রূপ নিতে পারেনি।
আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিলটি হাউজে তোলার জন্য জনসন শেষ মুহূর্তের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই বিলের প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে এখনো পর্যন্ত সমাধান হয়নি এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো নতুন ‘মেডিকাইড’ বিষয়ক কাজের সময়সীমা নির্ধারণ, ফেডারেল-রাজ্য পর্যায়ে ‘মেডিকাইডের’ খরচ ভাগাভাগি করার পদ্ধতি পরিবর্তন করা, সবুজ জ্বালানি করের সুবিধা কবে থেকে কমানো হবে এবং রাজ্য ও স্থানীয় কর থেকে কত পরিমাণ অর্থ কর্তন করা যাবে, ইত্যাদি বিষয়গুলো এখনো অমীমাংসিত।
এছাড়াও, বিলটি কত পরিমাণ বাজেট ঘাটতি সৃষ্টি করবে এবং কতজন আমেরিকান ‘মেডিকাইড’ ও খাদ্য ভাতার মতো সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন, সে বিষয়েও এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ, কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস এখনো বিলটির অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে কোনো চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করেনি।
জানা গেছে, রিপাবলিকান দলের নেতারা এখনো পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি। যদিও স্পিকার জনসন চান, বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই বিলটি হাউজ থেকে পাস করানো হোক। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাব এবং বিভিন্ন দাবির কারণে আলোচনা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।
তবে তারা এও দাবি করছেন যে, বিলের ‘৯৫ শতাংশের’ বেশি বিষয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে।
বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, ২০২৯ সাল থেকে ‘মেডিকাইডের’ সুবিধাভোগীদের জন্য কাজের নতুন নিয়ম চালু করা হবে। তবে রিপাবলিকানদের কট্টরপন্থীরা চাচ্ছেন, এই সময়সীমা আরও এগিয়ে আনা হোক। বিষয়টি দলের অপেক্ষাকৃত নরমপন্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এছাড়াও, কিছু কট্টরপন্থী সদস্য ফেডারেল সরকার কর্তৃক রাজ্য-পরিচালিত ‘মেডিকাইডে’র জন্য দেওয়া অর্থের পরিমাণ কমাতে চাইছেন, যা নরমপন্থীদের বিরোধিতার কারণ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘মেডিকাইডের’ কাজের সময়সীমা এগিয়ে আনা হলে বিলের মাধ্যমে আরও বেশি অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। তবে এর ফলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্য বীমা থেকে বঞ্চিত হবেন।
বর্তমানে, এনার্জি অ্যান্ড কমার্স কমিটির ‘মেডিকাইড’ বিষয়ক বিধান অনুযায়ী, ২০৩৪ সাল নাগাদ বিলের মাধ্যমে ৬২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হতে পারে, কিন্তু এর ফলে আরও ৭৬ লক্ষ মানুষ স্বাস্থ্য বীমা থেকে বঞ্চিত হবেন।
প্রস্তাবিত কর্মসংস্থান বিষয়ক নিয়মটি প্রায় ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয়ে সহায়তা করবে।
কিছু সংখ্যক নরমপন্থী রিপাবলিকান সদস্য প্রস্তাবিত কর কর্তনের সীমা ৩০,০০০ মার্কিন ডলার থেকে বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন। এমনটা করা হলে বিলের খরচ বাড়বে, যা ডানপন্থীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে।
সোমবার সকালে ‘সল্ট’ বিষয়ক আলোচনায় জড়িত একটি সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি এখনো সমাধান হয়নি এবং নেতৃত্ব এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সে সম্পর্কে তারা তেমন কিছু শোনেননি। নেতৃত্ব গত ২৪ ঘণ্টায় বিষয়টি নিয়ে কী করেছে জানতে চাইলে সূত্রটি একটি ক্রিকেটের ইমোজি ব্যবহার করেন।
স্পিকার জনসন এখনো তার দলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বুধবার ভোর ১টায় হাউজ রুলস কমিটির বৈঠকের আগে বিলটিতে চূড়ান্ত পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন। এই কমিটির বৈঠকে বিলের কিছু পরিবর্তনের জন্য একটি সংশোধনী যোগ করার কথা রয়েছে, যাতে বিরোধীদের রাজি করানো যায়।
তথ্য সূত্র: CNN