শিরোনাম: ব্রুস স্প্রিংস্টিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাদানুবাদ: আমেরিকার রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী ব্রুস স্প্রিংস্টিন এবং দেশটির প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সম্প্রতি বাদানুবাদ শুরু হয়েছে, যা বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে আলোচনার বিষয়। এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় গত সপ্তাহে, যখন স্প্রিংস্টিন ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে এক কনসার্টে ট্রাম্প প্রশাসনকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত, অযোগ্য এবং দেশদ্রোহী’ বলে মন্তব্য করেন।
স্প্রিংস্টিনের এই মন্তব্যের পরেই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি স্প্রিংস্টিনকে ‘বুড়িয়ে যাওয়া একজন রকস্টার’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তাঁর কণ্ঠরোধ করারও পরামর্শ দেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প এমনকি সঙ্গীতশিল্পী বেয়ন্সের বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন, তাঁর প্রচারণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, কমলা হ্যারিসের সমর্থনে বেয়ন্সের অনুষ্ঠানগুলো সম্ভবত অবৈধভাবে নির্বাচনী প্রচারের অংশ ছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্প্রিংস্টিনের এই ধরনের রাজনৈতিক মন্তব্য নতুন নয়। অতীতেও তিনি বিভিন্ন সময়ে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের নীতির সমালোচনা করেছেন। এমনকি, ১৯৮০-এর দশকে রোনাল্ড রেগানের একটি প্রচারণামূলক বক্তব্যে স্প্রিংস্টিনের গানের উদ্ধৃতি ব্যবহারেরও সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে স্প্রিংস্টিনের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন। ট্রাম্পের মতে, স্প্রিংস্টিন ‘একজন অপ্রতিভ এবং বিরক্তিকর ব্যক্তি’। তিনি আরও উল্লেখ করেন, স্প্রিংস্টিনের কণ্ঠ এবং গান তাঁর পছন্দ নয়।
এই বাদানুবাদ আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, স্প্রিংস্টিনের মতো একজন খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পীর সরাসরি সমালোচনা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের মতে, এর মাধ্যমে জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা সহজ হয়।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের অনুসারীরা মনে করেন, স্প্রিংস্টিনের এই ধরনের মন্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতাদর্শের বহিঃপ্রকাশ। তাঁদের মতে, একজন সঙ্গীতশিল্পীর এমন রাজনৈতিক মন্তব্য করা উচিত নয়।
বর্তমানে, ব্রুস স্প্রিংস্টিন ইউরোপে কনসার্ট করছেন এবং তাঁর আসন্ন আমেরিকান শো নিয়ে এখনও কোনো ঘোষণা আসেনি। অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই বাদানুবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং মিডিয়ার স্বাধীনতা সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। এটি একদিকে যেমন শিল্পী এবং জনসাধারণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করে, তেমনি বিতর্কিত মন্তব্য এবং তার প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক বিভাজনকেও আরও স্পষ্ট করে তোলে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস