যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণেচ্ছু বাংলাদেশিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হলো ‘গ্লোবাল এন্ট্রি’ (Global Entry)। এই প্রোগ্রামটির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় বিমানবন্দরে দীর্ঘ লাইন এড়িয়ে দ্রুত ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা যায়।
যারা প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেন, তাদের জন্য এটি সময় বাঁচানোর একটি দারুণ উপায়। কিন্তু কিভাবে এই সুবিধা পাওয়া যেতে পারে, এবং এর খরচ কত? চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমে, গ্লোবাল এন্ট্রি আসলে কী, তা পরিষ্কার হওয়া দরকার। এটি ইউ.এস. কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (U.S. Customs and Border Protection) বিভাগের একটি প্রোগ্রাম।
এর সদস্যপদ থাকলে, নির্বাচিত কিছু বিমানবন্দরে দ্রুত পাসপোর্ট এবং কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের জন্য একটি বিশেষ লাইনে প্রবেশ করা যায়। ফলে, সাধারণ যাত্রীদের তুলনায় অনেক কম সময়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।
গ্লোবাল এন্ট্রি প্রোগ্রামের সুবিধাভোগীরা টিএসএ প্রিচেক (TSA PreCheck) সুবিধাটিও পেয়ে থাকেন, যা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা-চেকিং-এর সময়কে আরও সংক্ষিপ্ত করে।
এখন আসা যাক, এই প্রোগ্রামের সদস্য হওয়ার খরচ ও যোগ্যতার বিষয়ে। সাধারণত, গ্লোবাল এন্ট্রিতে আবেদন করতে ১২০ মার্কিন ডলার লাগে, যা একবার পরিশোধ করলে পাঁচ বছর পর্যন্ত এর সুবিধা পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, পাঁচ বছর পর এটি নবায়ন করতে হয় এবং পুনরায় ফি দিতে হয়।
কিন্তু, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশি নাগরিকেরা কি এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন? দুঃখের বিষয় হলো, গ্লোবাল এন্ট্রি প্রোগ্রামের জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত কোনো অংশীদার দেশ নয়।
তাই, সরাসরিভাবে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা এই প্রোগ্রামের সুবিধা নিতে পারেন না।
তবে, যদি কোনো বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা (lawful permanent resident) হয়ে থাকেন, অথবা বৈধ ভিসাধারী হিসেবে সেখানে বসবাস করেন, তাহলে গ্লোবাল এন্ট্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে, একটি ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে হবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড চেক সম্পন্ন করতে হবে।
১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী যে কেউ এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে, আবেদনকারীর কোনো অপরাধের রেকর্ড থাকা বা আবেদনের সময় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে, সদস্যপদ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
গ্লোবাল এন্ট্রি প্রোগ্রামের জন্য সরাসরি আবেদন করতে না পারলেও, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে সেখানে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা টিএসএ প্রিচেকের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিছু ক্রেডিট কার্ড এই প্রোগ্রামের ফি পরিশোধ করতে সহায়তা করে।
এছাড়া, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স এবং ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমেও টিএসএ প্রিচেক-এর সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত এবং ঝামেলামুক্ত প্রবেশের জন্য গ্লোবাল এন্ট্রি একটি দারুণ সুযোগ। যদিও সরাসরিভাবে বাংলাদেশিদের জন্য এই সুযোগ সীমিত, তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে সেখানে বসবাসকারী এবং ঘন ঘন ভ্রমণকারীদের জন্য বিকল্প কিছু উপায় রয়েছে।
তথ্যসূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার