দৃষ্টি নন্দন চেহারা না থাকার কারণে লন্ডনের একটি কফি শপে (coffee shop) অপমানিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন ৩৫ বছর বয়সী অমিত ঘোষ।
তার অভিযোগ, কফি শপের এক কর্মচারী তার মুখের দিকে তাকিয়ে ‘আজ আর পরিবেশন করা হবে না’ বলে তাকে ফিরিয়ে দেন।
বিবিসির (BBC) একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
অমিত ছোটবেলা থেকেই নিউরোফাইব্রোম্যাটোসিস টাইপ ১ (Neurofibromatosis type 1) নামক একটি রোগে আক্রান্ত।
এই রোগের কারণে ত্বকের রং পরিবর্তন হয় এবং শরীরের স্নায়ু টিস্যুতে টিউমার হতে পারে।
অমিতের ক্ষেত্রে, এর ফলে মুখের বিকৃতিও ঘটেছিল।
১১ বছর বয়সে তার একটি চোখের অস্ত্রোপচার করতে হয়।
অমিত জানান, কফি শপে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর উপস্থিত সবাই তার দিকে তাকিয়ে ছিল, যেন তিনি কোনো ‘ভূত’ দেখছেন।
শুধু তাই নয়, সম্প্রতি একটি পার্কে ঘুরতে গেলে কয়েকজন তার চেহারার জন্য হাসি-ঠাট্টা করে এবং তাকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেয়।
এই ঘটনার পরেই তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, অমিত সিদ্ধান্ত নেন, তিনি মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে চান।
তিনি শিশুদের জন্য ‘বর্ন ডিফারেন্ট’ (Born Different) নামে একটি বই লেখেন।
বইটির মাধ্যমে তিনি ভিন্ন চেহারার মানুষদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন।
নিজের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে তিনি টিকটকে (TikTok) একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন, যা অল্প সময়েই ২ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।
অমিত বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের গল্প বলার মাধ্যমে আমি নিজেকে আরও ভালোভাবে গ্রহণ করতে শিখেছি।
এখন আমি বিশ্বকে বলি, এই আমি, হয় গ্রহণ করো, না হয় ত্যাগ করো।”
অমিতের এই কঠিন সময়ে ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা তাকে সাহস জুগিয়েছে।
খেলাটি তাকে ‘অমিত, যার মুখ দেখতে বিদঘুটে’ থেকে ‘অমিত, যে ক্রিকেট খেলে’ – এমন পরিচয় দিয়েছে।
তিনি মনে করেন, খেলাধুলা তাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে।
অমিতের এই ঘটনা আমাদের সমাজের চেহারা এবং ভিন্নতাকে গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখায়।
তথ্য সূত্র: বিবিসি নিউজ