মার্কিন ঋণের বোঝা: ট্রাম্পের কর ছাড়ের ভবিষ্যৎ কী?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ সংকট আবারও আলোচনার কেন্দ্রে, কারণ দেশটির ক্রেডিট রেটিং কমে গেছে। এর মধ্যেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত কর হ্রাসের পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত শুক্রবার মুডি’স রেটিং-এর তরফে আমেরিকার ক্রেডিট রেটিং কমানোর ঘোষণার পরেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে দোষারোপের পালা।

মুডি’স-এর মতে, সরকারের রাজস্বের তুলনায় দেশটির ঋণের বোঝা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে, দেশের আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে উভয় দলের আইনপ্রণেতাদেরই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তবে এর মধ্যেই, রিপাবলিকানরা একটি বড় ধরনের আইন প্রণয়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা ২০৩৪ সাল পর্যন্ত বার্ষিক ঘাটতি ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যদিও প্রস্তাবিত এই কর হ্রাসের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি, কারণ এটি কংগ্রেসের উভয় কক্ষে নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। এমনকি, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারাও বলছেন যে, চূড়ান্ত করার আগে এই পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আনা হতে পারে।

এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের কর কমানো, যা বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের কাটছাঁটের থেকে অনেক বেশি। রিপাবলিকানদের দাবি, এই কর কমানোর ফলে দেশের বাজেট ঘাটতি বাড়বে না। তাদের মতে, বিভিন্ন খাতে অপচয়, দুর্নীতি এবং অনিয়ম বন্ধের মাধ্যমে ঘাটতি কমানো সম্ভব হবে। তবে, বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা হলো, এই কর কমানো হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। এর কারণ, সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়বে, যা বন্ডের বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকির কারণ হবে।

শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। বন্ডের সুদ (yield) এক শতাংশের বেশি বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের ঘাটতি ততক্ষণ পর্যন্ত সমস্যা নয়, যতক্ষণ না বিনিয়োগকারীরা এটিকে সমস্যা হিসেবে দেখছেন। কিন্তু বর্তমানে, তারা এটিকে একটি উদ্বেগের বিষয় হিসেবে বিবেচনা করছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে কর হ্রাসের প্রস্তাবনায় পরিবর্তন আসতে পারে, যাতে ঘাটতির ওপর এর প্রভাব কমানো যায়। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এটি পাস করার ব্যাপারে আশাবাদী।

এই ঘটনার ফলে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কিছু প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, মার্কিন অর্থনীতির দুর্বলতা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং রেমিট্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *