এখানে একটি নতুন সংবাদ নিবন্ধ, যা মূল নিবন্ধের তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
সংগীত থেকে শিল্পের আঙিনায়: আমেরিকার শিল্পী মলি বার্চের নতুন পথচলা।
সঙ্গীত জগতে পরিচিত মুখ ছিলেন মলি বার্চ। তাঁর সুরেলা কণ্ঠ ও গানের গভীরতা ছিল শ্রোতাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়।
তবে শিল্পী জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে, তিনি এক ভিন্ন পথে যাত্রা শুরু করেছেন। সঙ্গীতের জগৎ ছেড়ে, তিনি এখন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য একটি আর্ট স্টুডিও গড়ে তুলেছেন, যার নাম ‘পিকনিক স্টুডিও’। লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থিত এই স্টুডিও, শিল্পী বার্চের জীবনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
২০২৩ সালে, কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে সঙ্গীত জগতে যখন এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই সময়ে মলি বার্চ অনুভব করেন, তাঁর জীবনে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কিন্তু এবার তিনি নতুন কিছু করতে চেয়েছিলেন। পুরনো পেশা থেকে দূরে সরে এসে, তিনি টেক্সাসের একটি অলাভজনক স্টুডিও, ‘সেজ স্টুডিও’-তে কাজ করা শুরু করেন। সেখানে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিল্পীদের কাজ দেখে তিনি মুগ্ধ হন এবং তাঁদের জীবন পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করতে চান।
বার্চ জানান, ‘সেজ স্টুডিও’-তে কাজ করার সময় তিনি উপলব্ধি করেন, এই ধরনের কার্যক্রম মানুষের জীবনকে কত গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি তাঁর বন্ধু, শিল্পী সাশা স্ট্যানার্ডের সঙ্গে মিলে ‘পিকনিক স্টুডিও’র ধারণা তৈরি করেন।
পিকনিক স্টুডিওর মূল লক্ষ্য হলো, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করা। এখানে তাঁরা সামাজিক জীবন উপভোগ করতে পারবে এবং তাঁদের সৃজনশীলতাকে বিকশিত করার সুযোগ পাবে।
বার্চ মনে করেন, এই ধরনের স্টুডিও বিশেষভাবে প্রয়োজন, কারণ এটি তাঁদের সমাজের মূল স্রোতে মিশে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, সমাজের অন্যরাও এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিশুক।
পিকনিক স্টুডিও বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বার্চ ও স্ট্যানার্ড চান, এই স্টুডিও ছোট আকারে থাকুক, যাতে তাঁরা সরাসরি এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন এবং কর্মীদের উপর নজর রাখতে পারেন।
তাঁদের পরিকল্পনা হলো, ১০ থেকে ১৫ জন শিল্পী নিয়ে কাজ করা। এখানে শিল্পীরা তাঁদের কাজ করতে পারবে, প্রয়োজনীয় উপকরণ পাবে এবং তাঁদের কাজ প্রদর্শনের সুযোগও তৈরি হবে।
বার্চ জানান, তাঁরা চান এখানে শিল্পীরা তাঁদের কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারুক।
বার্চ মনে করেন, সঙ্গীত জীবনের অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে নিজে সবকিছু পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা, এই অলাভজনক সংস্থা পরিচালনায় তাঁকে সাহায্য করছে। তিনি বলেন, “একটি ব্যান্ড পরিচালনার চেয়ে একটি অলাভজনক সংস্থা চালানো অনেক বেশি সহজ।
পিকনিক স্টুডিওর কার্যক্রম বর্তমানে তাঁদের বাড়ি থেকেই চলছে। তবে খুব শীঘ্রই তাঁরা একটি স্থায়ী স্থান তৈরি করতে চান। এর জন্য তাঁরা অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
বার্চ জানিয়েছেন, তাঁরা চান অনুদান এবং ব্যক্তিগত সাহায্যকারীদের উপর নির্ভর করতে, সরকারি সাহায্যের উপর ততটা নয়।
পিকনিক স্টুডিও-র এই উদ্যোগ, আমাদের সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি দেখায়, কিভাবে একজন শিল্পী সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন।
তাঁদের এই প্রচেষ্টা অন্যদেরও উৎসাহিত করবে, বিশেষ করে বাংলাদেশে, যেখানে এই ধরনের উদ্যোগের খুব প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: পিপলস