জাপানে চালের দাম বৃদ্ধিতে নাকাল জনতার মধ্যে দেশটির কৃষি মন্ত্রীর পদত্যাগ।
জাপানে চালের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে যখন সাধারণ মানুষ দিশেহারা, ঠিক সেই সময় বিনামূল্যে চাল পাওয়ার বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন দেশটির কৃষি মন্ত্রী তাকু ইতো। সম্প্রতি এক সেমিনারে তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি যেহেতু অনুদান হিসেবে অনেক চাল পান, তাই তাকে বাজার থেকে চাল কিনতে হয় না।
মন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য জাপানের জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাপানে চালের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়, যা সাধারণ মানুষের জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৩ সালের খারাপ ফলন, ভূমিকম্পের সতর্কতা এবং পর্যটন বৃদ্ধি।
এছাড়াও, বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্যহীনতাও দাম বাড়ার অন্যতম কারণ। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি মজুত থেকে চাল ছাড়ার চেষ্টা করা হলেও, তাতে খুব একটা সুফল পাওয়া যায়নি।
বিরোধী দলগুলো ইতো-র এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানায় এবং বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনারও হুমকি দেয়। দেশটির প্রধান বিরোধী দল, কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ জাপান-এর সেক্রেটারি জেনারেল জুনয়া ওগাওয়া এই মন্তব্যকে ‘অত্যন্ত অনুপযুক্ত, অসংবেদনশীল এবং অসহনীয়’ বলে উল্লেখ করেন।
যদিও পরে ইতো তার মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং জানান যে তিনি বিষয়টি বাড়িয়ে বলেছিলেন। তিনি আরও যোগ করেন, তার স্ত্রী মাঝে মাঝে চাল কেনেন, যখন তাদের সংগ্রহে থাকা চাল ফুরিয়ে যায়।
কিন্তু ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শিজেরু ইশিবা ইতো-র পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, কৃষি নীতি যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করতে চান।
ইশিবা এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে জাপানি জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
ইতো-র উত্তরসূরি হিসেবে সাবেক পরিবেশ মন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইশিবা আশা করছেন, কোইজুমি চালের মূল্যবৃদ্ধির এই সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
উল্লেখ্য, জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (LDP) প্রধান সমর্থক গোষ্ঠী হলো দেশটির কৃষক সমাজ।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা