চালের দামে মন্ত্ৰীর বিদায়: জাপানে কি তবে ক্ষমতার পালাবদল?

জাপানে চালের মূল্যবৃদ্ধি: কৃষিমন্ত্রীর পদত্যাগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা

জাপানে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে যখন সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে, ঠিক সেই সময়ে দেশটির কৃষিমন্ত্রীর পদত্যাগ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি চাল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার পরেই তাকে এই পদ ছাড়তে হয়েছে।

জাপানের সাবেক কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো সম্প্রতি এক বক্তৃতায় বলেছিলেন যে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে কখনো চাল কেনেন না, কারণ তার সমর্থকেরা তাকে যথেষ্ট চাল সরবরাহ করেন। এমনকি তার এত চাল রয়েছে যে, তিনি তা বিক্রিও করতে পারেন। মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পরই জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এর ফলস্বরূপ, তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

জাপানে চাল প্রধান খাদ্যশস্য হওয়ায় এর মূল্যবৃদ্ধি একটি গুরুতর রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বর্তমানে বাজারে চালের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রতি পাঁচ কিলোগ্রাম চালের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৪,২৬৮ ইয়েন (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩,৯০০ টাকা)। এই পরিস্থিতিতে সরকার জরুরি মজুত থেকে চাল ছাড়তে এবং বাইরের দেশ থেকে চাল আমদানি করতে বাধ্য হয়েছে।

বিষয়টি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সরকারের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উচ্চকক্ষ নির্বাচনের আগে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই তার সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিসভার অনুমোদনের হার রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে, যা প্রায় ২৭.৪ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চললেও, এখনো পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে নতুন কৃষিমন্ত্রী হিসেবে কোইজুমি শিনজিরোকে দায়িত্ব দিয়েছেন। নতুন মন্ত্রীকে দ্রুততম সময়ে ভোক্তাদের জন্য চালের সরবরাহ নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, জাপানের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হতে পারে। কারণ, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং এর রাজনৈতিক প্রভাব একটি বৈশ্বিক সমস্যা।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *