যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা দেশটির অর্থনীতিতে নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এপ্রিল মাসে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৫ শতাংশে, যা গত জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। এর আগে মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ২.৬ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণগুলো হলো বিদ্যুত ও পানির বিলের মতো অভ্যন্তরীণ খরচ বৃদ্ধি, ব্যবসার ওপর উচ্চ কর এবং শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি। এর ফলে যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডকে সুদহার কমানোর ক্ষেত্রে আরও সতর্ক করবে, কারণ তাদের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ শতাংশ।
যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের পর এটিই মূল্যস্ফীতির সবচেয়ে বড় উল্লম্ফন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকটকালে এই সময়ে জ্বালানি সংকট দেখা গিয়েছিল।
যদিও বাণিজ্য বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, আগামী বছর মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমতে পারে, যার কারণ হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তি।
এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সরকার বেশ চাপে পড়েছে। গত জুলাই মাসে ক্ষমতায় আসার পর তারা অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও, বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি এর জন্য লেবার সরকারের কর নীতিকে দায়ী করছে।
ট্রেজারি প্রধান র্যাচেল রিভস বলেছেন, “আমি এই পরিসংখ্যানে হতাশ, কারণ আমি জানি জীবনযাত্রার ব্যয় এখনো শ্রমিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।” কনজারভেটিভ পার্টির অর্থনীতি বিষয়ক মুখপাত্র মেল স্ট্রাইড বলেছেন, “লেবার চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্তের ফল পরিবারগুলো ভোগ করছে।”
যুক্তরাজ্যের এই মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে কেমন হবে, সেদিকে এখন অনেকেই তাকিয়ে আছে। বিশেষ করে, বিভিন্ন দেশের বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আরো কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস