ফিলিস্তিনে সফরে আসা কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি!

পশ্চিম তীরে একটি শরণার্থী শিবিরে পরিদর্শনে যাওয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে সতর্কতামূলক গুলি ছুড়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বুধবারের এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মহল।

জানা গেছে, জেনিন শরণার্থী শিবিরে যাওয়া কূটনীতিকদের বহরে ছিলেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা সহ ২০টির বেশি দেশের প্রতিনিধি। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে ‘পূর্ব পরিকল্পিত ও বেআইনি’ আখ্যা দিয়েছে। তাদের মতে, কূটনীতিকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে নিন্দনীয়।

ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি সেনারা একটি রাস্তার গেটের কাছে এসে দাঁড়ানো কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ছে। গুলির শব্দ শোনা যাওয়ার পর কূটনীতিকদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে দেখা যায়। ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, “দেয়ালের কাছে থাকুন, দেয়ালের কাছে থাকুন।

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি সরকারকে সরাসরি এই ঘটনার জন্য দায়ী করে বলেছে, “এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই জবাবদিহিতা এড়াতে পারবে না।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শরণার্থী শিবিরে কূটনীতিকদের এই সফর পূর্ব-পরিকল্পিত ছিল এবং তাদের গন্তব্য সম্পর্কে অবগত করা হয়েছিল। তবে, সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, কূটনীতিকদের এই দল অনুমোদিত পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে এমন একটি অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল যেখানে তাদের যাওয়ার অনুমতি ছিল না।

আইডিএফ আরও জানিয়েছে, তারা ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে এবং খুব শীঘ্রই কূটনীতিকদের সঙ্গে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। একই সঙ্গে তারা এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বরেল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “কূটনীতিকদের জীবনহানির হুমকি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি ইসরায়েলকে এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানিও এই ঘটনার দ্রুত ব্যাখ্যা চেয়েছেন এবং কূটনীতিকদের উপর হামলার নিন্দা করেছেন। ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে।

জেনিন শরণার্থী শিবিরে সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনীর বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানো হয়। এতে একশ’র বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কূটনীতিকদের এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল সেখানে মানবিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *