গেমের দুনিয়ায় শেক্সপিয়ার: ম্যাকবেথের গল্প নিয়ে তৈরি হলো নতুন ভিডিও গেম!

কান চলচ্চিত্র উৎসবে এবার স্থান করে নিয়েছে ভিডিও গেম! সাধারণত সিনেমা জগতের ঝলমলে আয়োজনের জন্য পরিচিত কান চলচ্চিত্র উৎসবে সম্প্রতি প্রদর্শিত হয়েছে একটি ভিন্নধর্মী কাজ – ‘Lili’।

শেক্সপিয়রের বিখ্যাত নাটক ‘ম্যাকবেথ’-এর আধুনিক সংস্করণ এই গেমটি যৌথভাবে তৈরি করেছে ‘iNK Stories’ নামের একটি নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক গেম স্টুডিও এবং ‘Royal Shakespeare Company’।

গেমটির প্রধান আকর্ষণ হলো আধুনিক ইরানে ‘ম্যাকবেথ’ নাটকের পুনর্নির্মাণ।

গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন লেডি ম্যাকবেথ, যিনি এখানে ‘Lili’ নামে পরিচিত।

বাস্তব দৃশ্যের সঙ্গে ভিডিও গেমের কৌশল মিশিয়ে তৈরি হয়েছে এই গেমটি, যা খেলোয়াড়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

গেমটিতে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের আধা-সামরিক বাহিনী ‘বাসিজ’-এর একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী কর্মকর্তার স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী জার আমির ইব্রাহিমি।

গল্পের মূল বিষয়বস্তু হলো ক্ষমতা ও ষড়যন্ত্র।

লেডি ম্যাকবেথের মতোই এখানে ‘Lili’ তার স্বামীর ক্ষমতা লাভের জন্য নানা রকম চক্রান্তে লিপ্ত হন।

গেমটির নির্মাতারা বলছেন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং সমাজে তাদের সীমাবদ্ধতাগুলো তুলে ধরতেই তারা এই চরিত্রটি তৈরি করেছেন।

গেমটিতে খেলোয়াড়দের ‘Hecate Web’-এর সদস্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এই ‘Hecate Web’ হলো ম্যাকবেথের ডাইনিদের প্রতিরূপ, যারা ‘Lili’-র ফোন এবং কম্পিউটারে প্রবেশ করে তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে।

ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নজরদারি ও সেন্সরশিপ।

গেমটিতে এই বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

‘Lili’ যখন একটি মেকআপ টিউটোরিয়াল দেখতে চান, তখন রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধের কারণে তিনি তা করতে পারেন না।

খেলোয়াড়দের voyeuristic ভূমিকা নেওয়ার বিষয়টি এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্মাতারা জানিয়েছেন, গেমটি তৈরি করার মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজে নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাদের সীমাবদ্ধতাগুলো তুলে ধরা।

তাদের মতে, ‘Lili’ চরিত্রের মাধ্যমে নারীদের ভেতরের শক্তি এবং প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে তাদের লড়াই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

২০২৬ সালের শেষের দিকে ‘Lili’ মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।

এরই মধ্যে, রয়্যাল শেক্সপিয়ার কোম্পানি এই গেমটিকে নাটকে রূপান্তর করার পরিকল্পনা করছে।

নির্মাতারা এও জানিয়েছেন, গেমটির কিছু দৃশ্য নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে।

এই ঘটনা প্রমাণ করে, গেম, সিনেমা এবং থিয়েটারের মধ্যেকার বিভেদ ক্রমশ কমে আসছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *