নিজেদের ভুলে নিউ ইয়র্ক বিমানবন্দরে বিভ্রাট? মারাত্মক তথ্য ফাঁস!

নিউইয়র্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে বিমান চলাচলে বিঘ্ন, বিলম্ব এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। নিউইয়র্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্প্রতি বেশ কয়েকবার বিমান ট্র্যাফিকের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বিভ্রাট দেখা দিয়েছে।

এর ফলে হাজার হাজার যাত্রীর বিমান দেরিতে ছেড়েছে অথবা বাতিল হয়েছে। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, বিমান ট্র্যাফিকের নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা নিউইয়র্ক থেকে ফিলাডেলফিয়ায় সরানোর সিদ্ধান্ত।

বিমানবন্দরের কর্মীদের মতে, এই পরিবর্তনের কারণেই মূলত সমস্যাগুলো হচ্ছে। তাদের মতে, ফিলাডেলফিয়ায় স্থানান্তরের ফলে সেখানকার কর্মীরা একশ মাইলের বেশি দূরে বসে টেলিযোগাযোগ লাইনের মাধ্যমে নিউইয়র্কের আকাশ পথের তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

রাডার এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রেরণে ব্যবহৃত এই টেলিযোগাযোগ লাইনগুলো নির্ভরযোগ্যতার সঙ্গে কাজ করতে পারছে না। মাঝেমধ্যেই এতে বিভ্রাট ঘটছে, যার ফলশ্রুতিতে বিমানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ, গত ২৮শে এপ্রিল এই সিস্টেমে সম্পূর্ণ ত্রুটি দেখা দেয়। প্রায় ৯০ সেকেন্ডের জন্য রাডার স্ক্রিনগুলো অন্ধকার হয়ে যায় এবং পাইলটদের সঙ্গে রেডিও যোগাযোগ বন্ধ ছিল প্রায় এক মিনিটের মতো।

এই ঘটনার পেছনে রয়েছে একটি পুরোনো পরিকল্পনা, যা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময় নেওয়া হয়েছিল। যদিও এই ব্যবস্থা জো বাইডেনের আমলে কার্যকর করা হয়েছে, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, পরিকল্পনাটি ছিলো ত্রুটিপূর্ণ।

তারা বলছেন, নিউইয়র্কের আকাশপথ থেকে ফিলাডেলফিয়ার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে রাডার এবং অন্যান্য ডেটা পাঠানোর জন্য নির্ভরযোগ্য অবকাঠামো তৈরি করা হয়নি। এই দুর্বল অবকাঠামোর কারণে, সিস্টেমটিতে ঝুঁকি আরও বেড়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে কর্মী সংকট একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই কারণে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে কর্মীদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তেমন কোনো ফল হয়নি।

অবশেষে, কর্মী সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল সুবিধা ফিলাডেলফিয়ায় সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেন বিমানবন্দরের কর্মীরা।

তাদের মতে, এই পদক্ষেপের ফলে সমন্বয় আরও কঠিন হয়ে পড়বে এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

বর্তমানে, ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের মধ্যে এই বিষয়ে বিতর্ক চলছে। বিমানবন্দরের কর্মীরা বলছেন, এই পদক্ষেপের কারণে বিমান চলাচলে যে ব্যাঘাত ঘটছে, তা খুবই উদ্বেগের বিষয়।

এর ফলে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী নয়, আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে, যারা নিউইয়র্ক হয়ে অন্য গন্তব্যে যেতে চান, তাদের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা তৈরি করেছে।

এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের ভ্রমণকারীরা যারা নিউইয়র্ক হয়ে অন্য দেশে যান, তাদের ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ার বা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *