চীনের প্রযুক্তি বাজারে নিজেদের প্রভাব আরও বাড়াতে ইলেক্ট্রিক এসইউভি এবং নতুন চিপ উন্মোচন করলো স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান শাওমি (Xiaomi)। সম্প্রতি বেইজিংয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লেই জুন (Lei Jun) তাদের প্রথম ইলেক্ট্রিক এসইউভি ‘ইউ সেভেন’ (YU7) এবং ‘এক্সরিং ওয়ান’ (Xring O1) নামের একটি নতুন প্রজন্মের চিপ উন্মোচন করেন। খবরটি প্রযুক্তি বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
শাওমির এই পদক্ষেপ চীনের প্রযুক্তিখাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ। বাজারে টিকে থাকতে এবং শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ইউ সেভেন’ মডেলের এসইউভি একবার চার্জে ৮৩৫ কিলোমিটার (৫১৮ মাইল) পর্যন্ত পথ পাড়ি দিতে পারবে। এর শীর্ষ মডেলটি মাত্র তিন সেকেন্ডের সামান্য বেশি সময়ে শূন্য থেকে একশ কিলোমিটার গতি তুলতে সক্ষম। যা টেসলার মডেল ওয়াই (Tesla Model Y) এবং পোর্শের (Porsche) মতো জনপ্রিয় মডেলগুলোর চেয়েও দ্রুতগতির।
তবে, এখনো গাড়িটির দাম ঘোষণা করা হয়নি। লেই জুন জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই প্রি-অর্ডার এবং দামের বিষয়টি জানানো হবে।
অন্যদিকে, শাওমির নতুন চিপ ‘এক্সরিং ওয়ান’ তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক ৩ ন্যানোমিটার প্রযুক্তিতে। যা অ্যাপলের তৈরি চিপের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামবে। এই চিপটি শাওমির নতুন ‘১৫এস প্রো’ স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হবে। ফোনটির দাম ধরা হয়েছে ৫,৪৯৯ ইউয়ান, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮৪ হাজার টাকার সমান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিপ তৈরির ক্ষেত্রে শাওমির এই সাফল্য চীনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর মাধ্যমে বিদেশি প্রযুক্তির উপর নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে হুয়াওয়ে ৭ ন্যানোমিটারের বেশি উন্নত চিপ তৈরি করতে পারছে না।
লেই জুন জানিয়েছেন, চিপ তৈরির জন্য শাওমি এরই মধ্যে ১৩.৫ বিলিয়ন ইউয়ান (১.৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ করেছে। আগামী এক দশকে তারা এই খাতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ইউয়ান (৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। এছাড়াও, গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে তারা চলতি বছরে ৬ বিলিয়ন ইউয়ান (৮৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ করবে এবং তাদের গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) টিমে প্রায় ২৫০০ জন সদস্য কাজ করছেন।
শাওমির এই পদক্ষেপ প্রযুক্তি বাজারে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, এটি চীনের প্রযুক্তিখাতে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন