যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের ক্ষমতা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (প্রকাশিত খবর অনুযায়ী) এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপে সেখানকার ক্রীড়া দলগুলোর ওপরেও মারাত্মক প্রভাব পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
জানা গেছে, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা তাদের ক্যাম্পাসে ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৬,৮০০ বিদেশি শিক্ষার্থী, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর এক-চতুর্থাংশ, হয় অন্যত্র যেতে বাধ্য হবে, না হয় তাদের নিজ দেশে ফিরতে হতে পারে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে ‘বেআইনি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য কাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেছেন, তারা ঘৃণা ও বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন। তিনি আরও জানান, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণে হার্ভার্ডের ক্রীড়া দলগুলো, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় নির্ভর দলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুরুষদের হেভিওয়েটrowing টিমের আট জন সদস্যের মধ্যে সাত জনই আন্তর্জাতিক। এছাড়া, পুরুষ হকি দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এবং স্কোয়াশ দলের প্রায় ১০ জন সদস্য বিদেশি।
এমনকি মহিলা ফুটবল ও গলফ দলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন।
হার্ভার্ডে বর্তমানে ৪২টি ভ্যারিটি স্পোর্টস টিম রয়েছে। ‘স্পোটির্কো’ নামের একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ সেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের মধ্যে ২১ শতাংশই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, যা প্রায় ১৯৫ জন।
এদিকে, ম্যাসাচুসেটস-এর গভর্নর মাউরা হিলি এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের শাস্তি দেওয়ার শামিল এবং এর মাধ্যমে আমেরিকার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, এর ফলে চীনসহ অন্যান্য দেশগুলো লাভবান হবে, যারা এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি, যিনি একসময় হার্ভার্ডের হকি দলের খেলোয়াড় ছিলেন, এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর।