বিয়ে ভেঙে পালিয়ে যেতে চাওয়া কনেকে নিয়ে ক্ষেপে গেলেন বর! আসল কারণ…

বর ও কনের মধ্যে বিয়ের পরিকল্পনা নিয়ে তীব্র মতবিরোধ, একদিকে কনে চান ছোট অনুষ্ঠান, অন্যদিকে বরের স্বপ্ন বিশাল আয়োজন। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা, ২৪ বছর বয়সী এক তরুণী, যিনি শীঘ্রই মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হতে যাচ্ছেন, তার বিয়ের পরিকল্পনা নিয়ে দ্বিধায় পড়েছেন।

ঘটনা হলো, বিয়ের খরচ বাঁচিয়ে তিনি পড়াশোনার খরচ যোগাতে চান, তাই বড় আয়োজনের বদলে ছোট, অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে আগ্রহী।

সাধারণত, বাংলাদেশে বিয়ের অনুষ্ঠান মানেই বিশাল আয়োজন। এখানে সামাজিক সম্মান এবং পরিবারের প্রত্যাশা অনেক বড় বিষয়।

বিয়ের পেছনে প্রচুর অর্থ খরচ হয়, যা অনেক সময় একটি পরিবারের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।

কনের এই সিদ্ধান্ত তাই অনেকের কাছেই নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে।

মেডিকেল স্কুলে ভর্তির সুসংবাদ আসার পরেই কনে বুঝতে পারেন, বিশাল বিয়ের আয়োজন করলে তার শিক্ষা জীবন এবং আর্থিক পরিকল্পনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, হয় গোপনে বিয়ে করবেন, নয়তো ইউরোপে সামান্য কিছু খরচ করে একটি সুন্দর অনুষ্ঠান করবেন। যেখানে তার আনুমানিক ৭,০০০ ডলার খরচ হতে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭ লক্ষ টাকার সমান।

অন্যদিকে, তার ভাষায়, “বিয়েতে ৪০,০০০ থেকে ৭০,০০০ ডলার খরচ করার” কোনো মানে হয় না।

যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৪ লক্ষ থেকে ৭৭ লক্ষ টাকার সমান।

এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি তার মেডিকেল স্কুলের খরচ এবং স্বামীর ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখতে চান।

কিন্তু কনের এই সিদ্ধান্তে রাজি নন তার হবু বর।

বরের মতে, “বিয়েটা তার মায়ের স্বপ্নের মতো, আর এমনটা না হলে মা খুব কষ্ট পাবেন।

বরের মা বিয়ের খরচের মাত্র ১০ শতাংশ দিতে রাজি হয়েছেন।

কনে জানান, “বিয়েতে এত টাকা খরচ করার কোনো মানে নেই, যখন আমি জানি যে এই টাকা দিয়ে আমি পড়াশোনা করতে পারব।

কনে তার হবু বরের অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল, তবে তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল।

তিনি বলেন, “আমি বুঝি, কিন্তু আমি একজন ডাক্তার হওয়ার সুযোগ হারাতে চাই না, শুধু ২০০ জন মানুষকে খাওয়ানোর জন্য।

বরের মতে, এই সিদ্ধান্ত ‘স্বার্থপরতা’।

তিনি একটি “ছোট” বিয়ের প্রস্তাব দেন, কিন্তু কনের মতে, বরের ‘ছোট’ মানেও তার পক্ষের প্রায় ৯০ জন অতিথি, যা এখনও অনেক বেশি এবং এতেও বিপুল খরচ হবে।

বিষয়টি নিয়ে কনে জানতে চান, তার এই সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই কনেকে সমর্থন করেছেন।

তারা মনে করেন, শিক্ষার গুরুত্ব সবার আগে এবং বিয়ের জন্য এত টাকা খরচ করাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

অনেকে এমনও পরামর্শ দিয়েছেন, যদি বর তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন, তবে কনেকে সম্পর্কটি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

কারণ, একজন মানুষের ক্যারিয়ার এবং সঞ্চয়কে যিনি তুচ্ছ জ্ঞান করেন, তার সঙ্গে সারা জীবন কাটানো কঠিন হতে পারে।

সবশেষে, এই ঘটনাটি আমাদের সমাজে আর্থিক পরিকল্পনা, শিক্ষার গুরুত্ব এবং দাম্পত্য জীবনের সিদ্ধান্তগুলোতে পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখায়।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *