হার্ভার্ড: বিদেশি শিক্ষার্থী নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদ!

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ: বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে জটিলতা

যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতি সম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি’র বিরুদ্ধে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ, যা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বোস্টনের একটি ফেডারেল আদালতে দায়ের করা এক মামলায় হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করে। এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭,০০০ এর বেশি ভিসা-ধারী শিক্ষার্থীর ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দ্রুত একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানাবে, যাতে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে না পারে।

হার্ভার্ডে প্রায় ৬,৮০০ বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে, যাদের অধিকাংশই স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্র। তারা বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশ থেকে এখানে আসে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এবং এর আন্তর্জাতিক পরিচিতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (Department of Homeland Security) বৃহস্পতিবার জানায়, হার্ভার্ড ক্যাম্পাস “মার্কিন-বিরোধী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সমর্থক” কিছু ব্যক্তির দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়াও, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসাজশের অভিযোগও আনা হয়েছে।

অভিযোগ, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি চীনের একটি আধা-সামরিক গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার জানান, গত দেড় বছরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের প্রশাসনিক কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন এনেছে, যার মধ্যে রয়েছে বর্ণবাদ বিরোধী কার্যক্রম। তিনি আরও বলেন, প্রতিশোধের ভয়ে তারা তাদের “আইনগতভাবে সুরক্ষিত মূলনীতি” থেকে সরে আসবেন না।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগসাজশের বিষয়ে রিপাবলিকানদের উত্থাপিত অভিযোগের জবাবও তারা দেবেন বলে জানিয়েছেন।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কিছু তথ্য সরবরাহ করতে হবে। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা সহিংসতা বা প্রতিবাদে জড়িত, তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এই তথ্য পেলে, হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে। নোয়েম আরও জানান, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ সমস্ত রেকর্ড সরবরাহ করতে পারে, তবে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এর মধ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ বা কোনো প্রকার বিপজ্জনক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অডিও বা ভিডিও ফুটেজও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

এই মামলাটি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে, যা রিপাবলিকান প্রশাসনের আরোপিত ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি ফেডারেল অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা অন্য একটি মামলার থেকে আলাদা।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *