১২ বছর বয়সী জোনেলের খুন: কোথায় এখন ঘাতক?

শিরোনাম: তিন দশক পর রহস্যের জট, ১২ বছরের বালিকার হত্যা: কোথায় আছেন হত্যাকারী স্টিভেন প্যানকে?

১৯৮৪ সালের শীতের এক সন্ধ্যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর গ্রীলে শহরে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা আজও অনেককে নাড়া দেয়। ১২ বছর বয়সী জোনelle ম্যাথিউস নামের এক বালিকা, যিনি ক্রিসমাস কনসার্ট থেকে ফেরার পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। সেই ঘটনার দীর্ঘ সময় পর, অবশেষে জানা গেছে, কে ছিল এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।

ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত স্টিভেন প্যানকে নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

জোনelle ম্যাথিউস ছিলেন একজন সাধারণ কিশোরী। খেলাধুলা ভালোবাসতেন, বন্ধুদের জন্য উপহার তৈরি করতে পছন্দ করতেন, এবং গান গাইতেন।

ঘটনার দিন, স্কুলের কনসার্ট শেষে এক বন্ধুর বাবার গাড়িতে করে বাড়ি ফেরে সে। কিন্তু বাড়িতে ফিরে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই সে নিঁখোজ হয়ে যায়। তার বাবা-মা যখন বাসায় ফেরেন, তখন তারা জোনelleকে খুঁজে পাননি।

এরপর শুরু হয় ব্যাপক খোঁজাখুঁজি, কিন্তু কোনো সন্ধান মেলেনি।

ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। আশেপাশে খুঁজে পাওয়া যায় কিছু পায়ের ছাপ, যা সম্ভবত কেউ বাড়ির পেছনের দিকের জানালা দিয়ে ঢুকেছিল তার প্রমাণ দেয়। জোনelle-এর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা দ্রুতই জাতীয় পর্যায়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

তাকে খুঁজে বের করার জন্য দুধের কার্টুনে তার ছবি ছাপানো হয়েছিল, যা সে সময়ে শিশুদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সচেতনতা বাড়াতে সহায়ক হয়েছিল।

দীর্ঘদিন পর, ২০১৯ সালে জোনelle-এর কঙ্কাল খুঁজে পাওয়া যায় গ্রীলের কাছে একটি নির্জন স্থানে। তার শরীরে গুলির চিহ্ন ছিল, যা নিশ্চিত করে যে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এরপর শুরু হয় হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া।

তদন্তের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর, সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হন স্টিভেন প্যানকে। তিনি জোনelleদের প্রতিবেশী ছিলেন এবং তাদের গির্জার সাথেও যুক্ত ছিলেন। প্যানকের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক ছিল।

জোনelle নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি শহর ছেড়ে চলে যান, এবং পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন সময়ে ঘটনার বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন। এমনকি তিনি রাজনৈতিকভাবেও সক্রিয় ছিলেন, এবং দুবার আইডাহোর গভর্নর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

২০২০ সালে, প্যানকেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে খুন ও অপহরণের অভিযোগ আনা হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর, তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বর্তমানে তিনি কলোরাডোর একটি কারাগারে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন।

জোনelle-এর পরিবার এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। তারা দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তাদের মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে আসছিলেন।

জোনelle-এর বোন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি স্টিভেন প্যানকের উপর রাগ পুষে রাখতে চান না, কারণ তিনি তাকে আর কোনো ভিকটিম দিতে চান না।

এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে দীর্ঘ সময় লাগলেও, তদন্তের গুরুত্ব অপরিসীম।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *