ট্রাম্পের ৫০% শুল্কের হুমকি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি চুপ থাকবে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সকল পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইইউ জানিয়েছে, তারা তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে প্রস্তুত এবং একটি সমঝোতার জন্য চেষ্টা করবে।

শুক্রবার (২৯শে মার্চ) ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা করেন যে, ইইউর সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় তিনি ১লা জুন থেকে এই উচ্চ শুল্ক আরোপের সুপারিশ করছেন। তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো যদি যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করে, তাহলে এই শুল্কের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।

ইইউ’র শীর্ষ বাণিজ্য কর্মকর্তা মারোস সেফকোভিক এই বিষয়ে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জ্যামিসন গ্রিয়ার এবং বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুডনিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানান, ইইউ একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং উভয় পক্ষের জন্য উপযুক্ত একটি সমাধানে আসতে চায়।

জার্মানির অর্থমন্ত্রী ক্যাথারিনা রাইখ সতর্ক করে বলেছেন, ইউরোপীয় কমিশনকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে হবে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট সেন্ট-মার্টিন জানান, ইইউ উত্তেজনা কমাতে চায়, তবে প্রয়োজনে জবাব দিতে প্রস্তুত।

যদি এই শুল্ক কার্যকর করা হয়, তাহলে চীনের তুলনায় ইইউর রপ্তানি পণ্যের উপর বেশি কর দিতে হবে। উল্লেখ্য, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনার সুবিধার্থে চলতি মাসের শুরুতে চীনের উপর শুল্ক হ্রাস করা হয়েছিল।

আগের ঘটনাপ্রবাহে, এপ্রিলের শুরুতে ট্রাম্প ইইউর বেশিরভাগ পণ্যের উপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন। পরে আলোচনার জন্য তা ৮ই জুলাই পর্যন্ত ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। ট্রাম্পের অভিযোগ, বিদ্যমান বাণিজ্য কাঠামো যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য ‘অন্যায্য’। ইইউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে যত পণ্য কেনে, তার চেয়ে বেশি বিক্রি করে।

শুধু তাই নয়, ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত না হয়ে বিক্রি হওয়া আইফোনের উপরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। এই ঘোষণার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ উভয় জায়গার শেয়ার বাজারে দরপতন হয়েছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ এবং প্যান-ইউরোপীয় স্টক্স ৬০০ সূচক ১.২ শতাংশ কমেছে।

এই শুল্কের হুমকি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। বাণিজ্য যুদ্ধের এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, পোশাক শিল্পের মত প্রধান রপ্তানি খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতির উপর বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *