সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি প্রায়ই পরিবারের মধ্যে বিবাদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সম্প্রতি, ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে এক নারীর পরিবারে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র মতবিরোধ।
নিজের ছবি অনলাইনে শেয়ার করা হোক, এমনটা তিনি চাননি, কিন্তু তাঁর পরিবারের সদস্যরাই সেই ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেননি।
জানা গেছে, ত্রিশোর্ধ্ব ওই নারী সম্প্রতি তাঁর পরিবারের সাথে একটি ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বারবার তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, তাঁর কোনো ছবি যেন সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ না করা হয়।
কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর পেশাগত কারণে ছবি অনলাইনে দেওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাঁর প্রোফাইল ব্যক্তিগত করা থাকলেও, তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের ক্ষেত্রে সেই নিরাপত্তা নাও থাকতে পারে।
কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরা তাঁর এই ইচ্ছের প্রতি সম্মান দেখাননি। ওই নারীর ভাই একটি পারিবারিক ছবি, যেখানে তিনিও ছিলেন, সেটি ফেসবুকে আপলোড করেন।
যদিও আপলোডের কিছুক্ষণ পরেই ছবিটি সরিয়ে নেওয়া হয়, ততক্ষণে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তা অনলাইনে ছিল।
বিষয়টি নিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। ওই নারীর মা তাঁর মেয়ের উদ্বেগকে গুরুত্ব দেননি বরং তাঁর আচরণকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এমনকি, তিনি এমনও অভিযোগ করেছেন যে, তাঁর মেয়ে সম্ভবত পরিবারের সদস্যদের ‘লজ্জা’ করেন বলেই ছবি অনলাইনে দিতে চান না।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, ছবিটি প্রিন্ট করে ফ্রেমে বাঁধানোর প্রস্তাব দিলেও, মা তাতে রাজি হননি।
এই ঘটনা অনলাইনে প্রকাশিত হলে, বহু মানুষ তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানান। অধিকাংশ মন্তব্যকারী ওই নারীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং তাঁর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারের পক্ষে মত দিয়েছেন।
তাঁদের মতে, পরিবারকে অবশ্যই ব্যক্তিগত ইচ্ছের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। কারো কারো মতে, ছবি তোলার সময় সচেতন থাকা উচিত অথবা ভবিষ্যতে পারিবারিক ছবিতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকা যেতে পারে।
তবে, অনেকে আবার মনে করেন, সামান্য একটি ছবি আপলোড করা নিয়ে এত বিতর্কের কোনো কারণ নেই। তাঁদের মতে, ২৪ ঘণ্টার জন্য একটি ছবি স্টোরিতে থাকলে এতটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ার বিস্তার ঘটেছে, সেই সাথে বেড়েছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা। পরিবার এবং সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই বিষয়টির গুরুত্ব অপরিসীম।
এই ঘটনাটি আবারও মনে করিয়ে দেয়, ডিজিটাল যুগে ছবি শেয়ার করার আগে আমাদের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: পিপল