ছেলে মায়ের বাড়ি বিক্রি করে বিশ্ব ভ্রমণে যাওয়ার সিদ্ধান্তে রাজি ছিলেন না। এখন যখন মায়ের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়, তখন তিনি ছেলের কাছে আশ্রয়ের জন্য এসেছেন।
কিন্তু সম্পর্কের টানাপোড়েনে জর্জরিত অবস্থায় ছেলেকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সম্প্রতি ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
জানা গেছে, ২৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি তার মায়ের এমন সিদ্ধান্তের কারণে হতাশ। মা সবসময় নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েছেন, আর্থিক সুরক্ষার কথা সেভাবে ভাবেননি।
ছেলেটির কথায়, শৈশবে মায়ের এই ধরনের আচরণ তাদের পরিবারে আর্থিক সমস্যার সৃষ্টি করেছিল।
প্রায় পাঁচ বছর আগে, ওই নারীর এক চরম সিদ্ধান্তে তার জীবন নতুন মোড় নেয়। তিনি বাড়ি বিক্রি করে দেন, চাকরি ছেড়ে বিশ্ব ভ্রমণে যান।
ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করেই এমনটা করেছিলেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা তাকে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু তিনি কারো কথা শোনেননি।
তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘ভবিষ্যতের সমস্যা তো ভবিষ্যতেরই।’
কিন্তু অবশেষে, তার এই সিদ্ধান্তের ফল তাকে ভোগ করতে হচ্ছে। এখন তিনি আর্থিক দিক থেকে অসহায় এবং থাকার মতো কোনো জায়গা নেই।
তাই তিনি ছেলের কাছে সাহায্য চেয়েছেন, তার সঙ্গে থাকতে চেয়েছেন।
সমস্যা হলো, ছেলে ও তার বাগদত্তা সম্প্রতি তাদের প্রথম বাড়ি কিনেছেন এবং বিয়ের পরিকল্পনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা বেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন।
ছেলেটি জানান, তাদের বাড়িতে জায়গা খুবই কম, তাছাড়া তারা নিজেদের জীবন গুছিয়ে নিতে চান। তাই তিনি মাকে একটি ভাড়ার ফ্ল্যাটে থাকার জন্য আর্থিক সাহায্য করতে চেয়েছেন।
কিন্তু মায়ের তাতে মন ওঠেনি।
ছেলেটি আরও জানান, মা তাকে ‘স্বার্থপর’ এবং ‘অকৃতজ্ঞ’ বলছেন। মায়ের অভিযোগ, তিনি (মা) ছেলের জন্য সবকিছু করেছেন, আর এখন ছেলে তাকে একা ফেলে দিচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছে।
ছেলেটি তার সিদ্ধান্তে অটল থেকে মাকে বুঝিয়ে বলেছেন যে, তিনি (মা) যখন কারো কথা শোনেননি, তখন এখন তার নিজের সিদ্ধান্তগুলোকেই সম্মান করতে হবে।
তিনি আরও জানান, তার মা একা এবং অসহায়—এ কথা ভেবে তার খারাপ লাগছে।
বিষয়টি এখন শুধু তাদের পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আত্মীয়-স্বজনেরা ছেলের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন, মাকে দেখাশোনা করার জন্য।
তাদের যুক্তি, ছেলে হিসেবে মায়ের প্রতি তার কিছু দায়িত্ব রয়েছে। যদিও ছেলের বাগদত্তা তার পাশে আছেন, তবে তিনিও মায়ের জন্য খারাপ অনুভব করছেন।
ছেলেটি এখন দ্বিধায় রয়েছেন—কী করা উচিত। বিষয়টি নিয়ে অনেকে সামাজিক মাধ্যমে তাদের মতামত জানাচ্ছেন।
তাদের মতে, মা তার নিজের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এখন তার ফলস্বরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আপনি তো তাকে সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু তিনি শোনেননি।’ জবাবে ছেলেটি বলেন, ‘এটা খুবই হতাশাজনক যে, তিনি তার আগের ভুল থেকে কিছুই শিখতে পারেননি।’
তথ্য সূত্র: পিপল