ডাক্তার গেলেন সেবা দিতে, ফিরতেই সন্তানদের পুড়ে যাওয়া দেহ!

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক চিকিৎসকের ৯ সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যু।

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি ডাক্তারের ৯ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার খান ইউনিসে তাদের বাড়িতে এই হামলা চালানো হয়। নিহত শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল ১২ বছর বয়সী, আর সবচেয়ে ছোটটির বয়স ছিল মাত্র তিন বছর।

ভয়াবহ এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন শিশুদের বাবা, যিনি নিজেও একজন চিকিৎসক। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ডাক্তার আলা নাজ্জার পেশায় একজন শিশু বিশেষজ্ঞ। ঘটনার দিন তিনি খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি যখন হাসপাতালে কাজ করছিলেন, ঠিক তখনই তার পরিবারের উপর নেমে আসে এই ভয়াবহ বিপদ।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় নিহত শিশুদের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বার্শ জানান, ডা. নাজ্জারের স্বামী ঘটনার কিছুক্ষণ আগে বাড়ি ফিরেছিলেন। তিনি আরও জানান, নিহত শিশুদের নাম হলো: ইয়াহইয়া, রাকান, রাসлан, জেবরান, ইভ, রিভাল, সাইদেন, লুকমান এবং সিদরা।

হামলার পর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকা পড়েছিল আরও দুই শিশুর মরদেহ। তবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ডা. নাজ্জারের ১১ বছর বয়সী এক ছেলে, আদাম।

নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আহমদ আল-ফাররা জানান, সন্তানদের হারানোর পরও ডা. নাজ্জার অবিচল ছিলেন এবং আহত স্বামী ও ছেলের চিকিৎসার তদারকি করেছেন। তিনি আহতদের পাশে থেকে তাদের সুস্থ করে তোলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান।

গাজা কর্তৃপক্ষের দাবি, ইসরায়েলি বিমান হামলাই এই ঘটনার জন্য দায়ী। যদিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউসেফ আবু আল-রিশ জানান, ডা. নাজ্জার তার কর্তব্য পালনের জন্য শিশুদের বাড়িতে রেখে হাসপাতালে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন হাসপাতালে পৌঁছাই, তখন দেখি তিনি শান্ত ও অবিচলভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। তার চোখে ছিল গভীর শোক, কিন্তু মুখে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছিলেন।’

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *