মেয়ের স্কুলের দুর্দশা দেখে বাবার চোখে জল, তারপর…

একজন মার্কিন ইউটিউবার, যিনি সমাজের জন্য কাজ করেন, তার কাজ এখন বিশ্বজুড়ে মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। পেশায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ম্যাশন স্মিথ, শুধু নিজের এলাকার স্কুলগুলোর সংস্কার করেই ক্ষান্ত হননি, বরং অন্যদেরও এই কাজে উৎসাহিত করছেন।

সম্প্রতি, তার এই অসামান্য কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০২৩ সালের ওয়েবি অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগনের বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী ম্যাশন, মূলত ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করেন। তার ভিডিওগুলোতে স্কুলের খেলার মাঠ তৈরি, ক্লাসরুম সংস্কার, শিক্ষকের বিশ্রামাগার তৈরি সহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ দেখা যায়।

শুধু তাই নয়, তিনি বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্র্যান্ড এবং সংস্থার সাথেও কাজ করেন। যেমন – লেগো, নাইকি, এবং হ্যাবিটেট ফর হিউম্যানিটি।

ম্যাশন স্মিথের এই কাজের শুরুটা হয় তার মেয়ের স্কুলের একটি ঘটনা থেকে। তিনি যখন দেখেন, স্কুলের বাস্কেটবল খেলার মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী, তখন তিনি নিজেই সেটি সারানোর উদ্যোগ নেন।

স্কুলের কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তিনি কাজটি করেন এবং সেই ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করেন। এরপর ধীরে ধীরে তিনি আরও অনেক স্কুলের সংস্কারের কাজ শুরু করেন।

বর্তমানে তিনি ১২টি বাস্কেটবল কোর্ট তৈরি করেছেন এবং তার এলাকার দুটি স্কুলের খেলার মাঠ তৈরি করেছেন।

আমি চাই, আমার কাজ দেখে মানুষ অনুপ্রাণিত হোক। তারা যেন তাদের আশেপাশেও এমন কিছু করার চেষ্টা করে, যা সমাজের উপকারে আসে।”

ম্যাশন

ম্যাশন-এর মতে, তার বাবার কাছ থেকেই তিনি এই কাজগুলো করার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। তার বাবা ছিলেন একজন নির্মাণ কর্মী এবং ছোটবেলায় ম্যাশন প্রায়ই বাবার সাথে কাজ করতেন।

সেই থেকেই তার এই ধরনের কাজে আগ্রহ জন্মায়।

একজন ইউটিউবার হিসেবে এত বড় কাজগুলো একা হাতে করাটা কঠিন। তবে ম্যাশন জানিয়েছেন, কিছু ভারী কাজ করার সময় তিনি বন্ধুদের সাহায্য নেন।

পারিবারিক জীবন এবং কাজের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে ম্যাশন খুবই সচেতন। তিনি তার পরিবারের সাথে কাটানো সময়কে খুব গুরুত্ব দেন এবং চেষ্টা করেন, সেই সময়টাতে যেন কোনো কাজের চাপ না থাকে।

ম্যাশানের ইউটিউব চ্যানেলে শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক কনটেন্ট তৈরি করা হয়। তিনি সব সময় চেষ্টা করেন, তার ভিডিওগুলো যেন সবার জন্য উপযোগী হয় এবং কোনো ধরনের নেতিবাচকতা না থাকে।

শুধু তাই নয়, সম্প্রতি তিনি মায়েদের জন্য একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিলেন, যেখানে নির্মাণ কাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

ম্যাশানের স্বপ্ন, ভবিষ্যতে তিনি এমন একটি টিভি শো তৈরি করতে চান, যেখানে তিনি অনুন্নত এলাকার স্কুলগুলোর সংস্কার করে দেবেন এবং সেই অঞ্চলের শিশুদের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করবেন।

ম্যাশানের এই উদ্যোগ, আমাদের সমাজের জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার কাজ প্রমাণ করে, ইচ্ছা থাকলে মানুষ একা হাতেও অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

তথ্যসূত্র: পিপল ম্যাগাজিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *