প্রেমিকার কারণে ভেঙেছিল বিয়ে! হতাশ এলটন জন, সঙ্গীহীন জীবনের কথা জানালেন

সঙ্গীতশিল্পী স্যার এলটন জন, যিনি তাঁর সুরেলা কণ্ঠ এবং অসাধারণ প্রতিভার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের কিছু অজানা কথা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।

ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে বহু বছর ধরে নেওয়া তাঁর কিছু পুরনো সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি একটি নতুন তথ্যচিত্র প্রকাশ হতে চলেছে, যেখানে এলটন জনের জীবনের বিভিন্ন দিক উন্মোচিত হয়েছে।

এই তথ্যচিত্রের একটি অংশে, এলটন জন তাঁর জীবনের এক কঠিন সময়ের কথা বলেছেন।

তিনি জানান, একসময় তিনি এমন একজন নারীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন যিনি তাঁর গান পছন্দ করতেন না।

বরং, তিনি এলটন জনকে প্রায়ই বলতেন, “তুমি তো কিছুই করতে পারো না, বরং একটা ব্যাংকের ম্যানেজার হলে ভালো করতে।”

এলটন জন সেই নারীকে বিয়ে করার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন, এমনকী বিয়ের কেক এবং ফ্ল্যাটও ঠিক হয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত, বন্ধু লং জন বাল্ড্রির পরামর্শে তিনি সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন।

বাল্ড্রি এলটন জনকে বলেছিলেন, “যে তোমার গান ভালোবাসে না, তাকে বিয়ে করাটা বোকামি।”

এলটন জনের মতে, বাল্ড্রির এই পরামর্শই সম্ভবত তাঁর জীবন বাঁচিয়েছিল।

আশির দশকে এলটন জন তাঁর এই সম্পর্ক ভেঙে দেন এবং পরবর্তীতে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন।

যদিও এরপরে তিনি রেনাটে ব্লুয়েলকে বিয়ে করেছিলেন, তবে সেই সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি।

এলটন জন পরবর্তীতে প্রকাশ্যে তাঁর উভকামিতার কথা জানান।

১৯৯৩ সালে, তিনি কানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা ডেভিড ফার্নিশের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান এবং ২০১৪ সালে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

ডেভিড ফার্নিশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এলটন জন জানান, তাঁদের মধ্যে মতের অমিল হলেও, তাঁরা কখনোই তা নিয়ে রাতের ঘুম নষ্ট করেন না।

ফার্নিশ বলেন, “আমরা নিশ্চিত করি যে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে, যদি কোনো বিষয়ে মনোমালিন্য হয়, তবে তা মিটিয়ে ফেলি।

ঝগড়া জিইয়ে রেখে পরের দিনের জন্য তা বয়ে নিয়ে যাই না।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমার মনে হয়, সম্পর্কের প্রতি সম্মান জানানোটা খুবই জরুরি।”

এলটন জনের জীবনের এই দিকগুলো তাঁর ভক্তদের কাছে নিঃসন্দেহে নতুন করে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে তাঁর পুরোনো সাক্ষাৎকারগুলো থেকে জানা যায়, খ্যাতি এবং সাফল্যের শীর্ষে থেকেও তিনি একাকীত্ব অনুভব করতেন।

তাঁর বিখ্যাত গানগুলোতেও সেই অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে।

“সরি সিমস টু বি দ্য হার্ডেস্ট ওয়ার্ড” অথবা “ক্যান্ডেল ইন দ্য উইন্ড”-এর মতো গানগুলো যেন তাঁর ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রতিচ্ছবি।

বর্তমানে, এলটন জন ডেভিড ফার্নিশের সঙ্গে সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন।

তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে এবং তাঁরা ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ।

তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া অনেকের কাছেই অনুকরণীয়।

আগামী ২৫শে মে মুক্তি পেতে যাওয়া “ডেভিড ফ্রস্ট ভার্সেস এলটন জন” তথ্যচিত্রে এই কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পীর জীবনের আরও অনেক অজানা কথা জানা যাবে।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *